পথ-আটকে: শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
সন্ধে তখন নামে নামে। মদের বোতল বগলদাবা করে টলতে টলতে খেতের মধ্যে দিয়ে হাঁটছিলেন এক যুবক। সঙ্গে গুনগুন গানের কলি।
এমনিতেই ওই পথে মদ্যপদের আনাগোনা বাড়তে থাকায় উত্যক্ত ছিলেন গ্রামের মেয়ে-বৌরা। যুবকের আচরণে তাঁদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে। অনেকে জড়ো হয়ে গিয়ে মদের বোতল আছড়ে ভেঙে ফেলেন। যুবকের তখন নেশা মাথায় উঠেছে। মহিলাদের হাতে-পায়ে ধরে ‘কাকিমা-মাসিমা’ পাতিয়ে কাকুতি-মিনতি শুরু করেন। দু’একটা চড়-থাপ্পড় উড়ে আসার আশঙ্কা ছিল ভিড়ের মধ্যে থেকে। তবে শেষমেশ কোনও মতে পালিয়ে বেঁচেছেন ওই যুবক।
কিন্তু মদ্যপদের উৎপাতে তিতিবিরক্ত মহিলারা শুক্রবার সকাল থেকে পথ অবরোধ শুরু করেন। যার জেরে হাবরার প্রতাপনগরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে হাবরা-বসিরহাট সড়ক। এলাকার কয়েকশো মহিলা এ দিন সকাল ১০টা থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পোস্টার হাতে পথ আটকে রাখেন। গাছের গুঁড়ি ফেলা হয় রাস্তায়। গাড়িঘোড়া আটকে পড়ে। কুশপুতুল পোড়ানো হয় এক বার মালিকের। ঠা ঠা রোদ্দুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক মহিলা। গাঁয়ের মহিলাদের বক্তব্য, ফসলের খেতের মধ্যে সরু একফালি রাস্তা। সেখান দিয়ে মদ খেয়ে বা কিনে নিয়ে যাওয়ার সময়ে যুবকেরা হইহুল্লোড় করে। মহিলাদের কটূক্তি করে। রাস্তায় মাতলামো করে। এতে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এলাকা একটি প্রাথমিক স্কুল, একটি শিবমন্দিরও আছে।
অবরোধকারীদের বক্তব্য, চোংদা মোড় এলাকায় যশোর রোডের পাশে একটি বার সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায়। ওই বার মালিক বারের পিছনে একটি দোকান করেছেন। সে জন্য ধান খেতের মধ্যে দিয়ে রাস্তা বের করেছেন তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে অপরিচিত মুখ ভিড় করছে মদ কিনতে। মদ খেয়েও ওই পথ ধরে যাতায়াত করছে।
পুলিশ-প্রশাসনের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ ওঠে। মহিলারা রাস্তা বেড়া দিয়ে ঘিরে দেন এ দিন। হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’