Water logged

আট মাস ধরে জমে জল, নীরব প্রশাসন

মন্দিরবাজার ব্লকের ঘাটেশ্বরা পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীকান্তপুর, নবপল্লি, নলপুকুর, মিরপুর এই তিনটি গ্রামের জল নিকাশি হত একটি ঝিলের মাধ্যমে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৩
Share:

জলমগ্ন: এই পরিস্থিতিতেই আছেন বাসিন্দারা. ছবি: দিলীপ নস্কর

দিন ধরে জলমগ্ন এলাকা। প্রায় আট মাস ধরে জলের মধ্যেই দিন কাটছে মানুষের। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ মন্দিরবাজারের কিছু গ্রামের বাসিন্দাদের।

Advertisement

মন্দিরবাজার ব্লকের ঘাটেশ্বরা পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীকান্তপুর, নবপল্লি, নলপুকুর, মিরপুর এই তিনটি গ্রামের জল নিকাশি হত একটি ঝিলের মাধ্যমে। লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশনের পাশে ওই ঝিল দিয়ে জল নেমে যেত ঘাটেশ্বর এলাকায়। কিন্তু ওই ঝিলের কালভার্টটি কয়েক বছর ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে সম্পূর্ণ জল নিকাশির পথও বন্ধ। বর্ষার সমস্ত জল জমে সারা এলাকা থই থই করছে। ওই তিনটি গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। বর্তমানে অধিকাংশ বাড়ির মধ্যে হাঁটু সমান জল ঢুকে রয়েছে। কোথাও বা কোমর সমান জল। পানীয় জলের নলকূপ প্রায় জলের তলায়। এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে।

মিরপুরের বাসিন্দা বছর চল্লিশের অরূপ হালদার জমা জল ঠেলে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে সাপে ছোবল মারে। ভর্তি করা হয়েছে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে। বিষয়টি জানার পরে বুধবার দুপুরে এলাকায় যান ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা। জমা জল সরানো নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এলাকার বাসিন্দা টুকটুকি সর্দার, খতিজা বিবিরা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, জল বেয়ে গোখরো, কেউটে, চন্দ্রবোড়া এমন সব বিষধর সাপ ঢুকে পড়ছে ঘরে। শুধু তাই নয়, নলকূপের দূষিত জল খেয়ে ছোট থেকে বড় সকলেই পেটের অসুখে ভুগছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন ভর্তি রয়েছেন স্থানীয় নাইয়ার হাট গ্রামীণ হাসপাতালে। এলাকায় জল জমে থাকার জন্য মানুষের হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হচ্ছে। নানা রকম চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে। কচিকাঁচাদের স্কুলে যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বাসিন্দাদের ট্রেন ধরতে গেলে ব্যাগে পোশাক রাখতে হচ্ছে। গামছা পরে জল ঠেলে স্টেশনে পৌঁছে পোশাক বদলাতে হচ্ছে। স্থানীয় মহিলারা বলেন, ‘‘ঘরের মধ্যে জল থাকায় রান্না করা যাচ্ছে না। কিছু মাটির বাড়ি ভেঙেও পড়েছে।’’

Advertisement

লক্ষ্মীপুর, মিরপুর, নলপুর গ্রাম উন্নয়ন কমিটি তৈরি হয়েছে সম্প্রতি। তারা দিন কয়েক আগে পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিওকে স্মারকলিপি দিয়েছে। ঘাটেশ্বরা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পুলক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রেলের ঝিলের পাশে যে কালভার্টটি ছিল, সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে জল নিকাশি হচ্ছে না। ওই কালর্ভাটি সংস্কারের জন্য রেলের দফতরে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু রেল কোনও উদ্যোগ না করায় সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন