Lockdown

অভুক্তদের পাশে অনেকেই

বাড়ি বাড়ি ঘুরে অথবা স্টেশনের যাত্রীদারে কাছে ভিক্ষা করেই পেট চলে জনা পঁচিশ মানুষের। ঠিকানা গাইঘাটার ঠাকুরনগর স্টেশন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০ ০৬:৩০
Share:

হাবড়া ও বাসন্তীতে সাহায্যের হাত। শুক্রবার ছবি তুলেছেন সুজিত দুয়ারি।

লকডাউনে বাজারহাটে নিষেধাজ্ঞা নেই। ফলে মুশকিল হলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ অসম্ভব নয়। কিন্তু দিন এনে দিনের খাওয়া জোটে যাঁদের, তাঁদের পকেট খালি। ফলে ভাঁড়ারও বাড়ন্ত। সেই তালিকায় আরও রয়েছে ভিখারি, ভবঘুরে থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ। এই লকডাউনেও দেখা গেল অনেক মানবিক মুখ। অনাহারে থাকার খবর পেয়ে এগিয়ে এলেন তাঁরা। কেউ বিলি করলেন রান্না করা খাবার, কেউ বা চাল-আলু। কোথাও এগিয়ে এলেন জনপ্রতিনিধি, পুরসভা কোথাও আম নাগরিক।

Advertisement

বাড়ি বাড়ি ঘুরে অথবা স্টেশনের যাত্রীদারে কাছে ভিক্ষা করেই পেট চলে জনা পঁচিশ মানুষের। ঠিকানা গাইঘাটার ঠাকুরনগর স্টেশন। লকডাউনের জেরে ট্রেন যেমন বন্ধ, তেমনই রাস্তাতেও বেরনো যাচ্ছে না। ভিক্ষা চাইতে গেলেও করোনা-আতঙ্কে দোর খুলছেন না সাধারণ মানুষ। এই দুঃসময়ে ভিখারিদের পাশে দাঁড়ালেন এলাকার বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ। বাড়িতে রান্না করে রোজ ওই ভিখারিদের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। ইন্দ্রজিৎ জানান, দিন তিনেক আগে স্টেশন দিয়ে যাওয়ার ভিখারিদের কথা জানতে পারেন তিনি। তারপর থেকেই খাবারের ব্যবস্থা শুরু করেছেন তিনি। লকডাউন চলবে তত দিন তিনি তাঁদের খাবার ব্যবস্থা করবেন বলে জানালেন।

হিঙ্গলগঞ্জের ঘোষপাড়ার বাসিন্দা বৃদ্ধা প্রমিলা কর্মকার ও তাঁর ছেলে বছর পঞ্চান্নর স্বপন কর্মকার দু’জনেই প্রতিবন্ধী। প্রমিলার মেয়ে বসিরহাটের বাড়ি থেকে প্রত্যেক সপ্তাহে বাজার করে পাঠিয়ে দেন মা ও ভাইয়ের জন্য। তিনি এই পরিস্থিতিতে কিছু পাঠাতে পারেননি। বাড়িতে এক বেলার খাবারও ছিল না। তা জানতে পেরে প্রতিবেশী সুশান্ত ঘোষ শুক্রবার সকালে কয়েক কেজি আলু ও চাল কিনে দেন।

Advertisement

বনগাঁ পুরসভার পক্ষ থেকে শুক্রবার থেকে পুর এলাকার গরিব মানুষদের মধ্যে চাল-ডাল-আলু বিলি করবার কাজ শুরু হল। এ দিন সকালে যোগেন্দ্রনাথ হাইস্কুলে একটি শিবির করে খাদ্যসামগ্রী বিলির কাজ শুরু করেন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। তিনি জানান, পুরসভার ৩২ হাজার পরিবারের কাছে ওই খাদ্যসামগ্রী পর্যায়ক্রমে পৌঁছে দেওয়া হবে। দিন মজুরেরা বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের সদস্য পরিতোষ সাহা শুক্রবার সেই ধরনের কিছু পরিবারের হাতে চাল-ডাল এবং সাবান তুলে দিয়েছেন। হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উদ্যোগে শহরের ভবঘুরেদের দু’বেলা রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।

গোবরডাঙা থানার পুলিশের পক্ষ থেকেও ভবঘুরে গরিব মানুষদের রান্না করা খাবার খাওয়ানো শুরু হয়েছে। ভবঘুরে-ভিখারি এবং পথ কুকুরদের রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করেছে ভাটপাড়া থানার পুলিশ। বাসচালক এবং শ্রমিকদের হাতে এক সপ্তাহের চাল, আলু এবং ডাল তুলে দিল বসিরহাট ৭২ এবং ৭২-এ বাস শ্রমিক ও মালিক সমিতি। শুক্রবার ওই সংগঠনের সভাপতি বাবুলাল সাধুখাঁ এবং সম্পাদক ছোটন মল্লিক বলেন, ‘‘বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আপাতত প্রায় ২০০ উপরে শ্রমিকের কোনও কাজ নেই। এই অবস্থায় তাঁদের সাংসারিক অবস্থার কথা ভেবে আমাদের পক্ষে ১০ কিলো চাল, ১০ কিলো আলু এবং ডাল দেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন