—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
স্বামীর সংসার ছেড়েছিলেন প্রেমিকের সঙ্গে থাকবেন বলে। তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রাম থেকে চলে গিয়েছিলেন সুদূর অন্ধ্রপ্রদেশে। সেখানে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে নাবালিকা কন্যাকে খুনের অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সরিষা কামারপোল গ্রামের বাসিন্দা নাজিরা বিবি বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে বাড়ি ছাড়েন বেশ কিছু দিন আগে। তাজউদ্দিন মোল্লা নামে এক যুবকের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশ। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন তিন বছরের কন্যাকে।
স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক না-থাকলেও মেয়ের খোঁজখবর রাখতেন আজাহার লস্কর। কিন্তু দিন কয়েক আগে তাঁকে বলা হয়, দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে মেয়ে। বিশ্বাস হয়নি আজাহারের। তিনি পারুলিয়া কোস্টাল থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে অন্ধ্রের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে রাজ্যের ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার কাট্রেনীকন্যা থানায় ছিলেন নাজিরা ও তাজউদ্দিন। প্রথমে তিন বছরের মেয়ে দুর্ঘটনাজনিত কারণে মারা গিয়েছে বলেছিলেন তাঁরা। তবে পরে ফাঁস হয়ে যায় মৃত্যুরহস্য। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে নাজিরা স্বীকার করেন, স্বামীর সংসার ছেড়ে নতুন করে প্রেমিকের সঙ্গে জীবন শুরু করতে গিয়ে সন্তানকে বাধা বলে মনে হয়েছিল তাঁর। ওই যুবতী এখন সন্তানসম্ভবা। প্রেমিকের সঙ্গে মিলে তিন বছরের কন্যাকে আছাড় মেরে খুন করেন তিনি। সেটা বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন। অন্ধ্রপ্রদেশে শিশুটির দেহের ময়নাতদন্ত হয়। সেখানেই দেহ কবরস্থ করা হয়।
শেষমেশ অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে তাজউদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে বলেন, “প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করার জন্য মা নিজেই সন্তানকে হত্যা করেছেন। জানা গিয়েছে, বর্তমানে নাজিরা অন্তঃসত্ত্বা এবং দাবি করেছেন, তাঁর গর্ভে থাকা সন্তান তাজউদ্দিনের (প্রেমিকের)।’’ তিনি জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। খুন হওয়া শিশুর বাবা চান, স্ত্রীর কঠোর শাস্তি। তিনি বলেন, ‘‘ওরা যেন কোনও ভাবে ছাড়া না পায়। সেটা নিশ্চিত করুক প্রশাসন।’’