ভাঙচুর: কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র।
কুকুরে কামড়ানোর টিকা (অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন) না পেয়ে হাসপাতাল ভাঙচুর করল একদল যুবক। শনিবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই সুজয় দাস নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় যুবক সুজয়কে শুক্রবার কুকুরে কামড়েছিল। চিকিৎসা করাতে এ দিন বিকেলে সে হাসপাতালে আসে। তাকে একটি টিটেনাস ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। কিন্তু কুকুরে কামড়ানোর প্রতিষেধক টিকা তখন হাসপাতালে ছিল না। তাকে সে কথা জানানো হয়। শুনেই ঝামেলা শুরু করে সুজয়। সুজয়ের সঙ্গে জুটে যায় কিছু স্থানীয় লোকজন। তখনই মারমুখী হয়ে ওঠে সুজয়। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা তা আটকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
কিছু দিন আগেই তৈরি হয়েছে হাসপাতালের নতুন রিসেপশন। উত্তেজনার বশে সেই রিসেপশনের কাচের দেওয়ালে ইট ছুড়তে শুরু করে সুজয়-সহ যুবকরা। চুরমার হয়ে যায় কাচের দেওয়াল, কম্পিউটার, প্রিন্টার-সহ আরও কিছু যন্ত্রপাতি। হাসপাতালের কর্মীরা তাণ্ডব দেখে পালাতে গেলে তাঁদের কয়েক জনকে মারধর করা হয়। তাঁদের চোট আশঙ্কাজনক নয় বলেই হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় কাকদ্বীপ এবং হারউড পয়েন্ট উপকূল থানার পুলিশ। সেই সময়ে বাকিরা পালিয়ে যায়। ধরা পড়ে সুজয়। তার বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং কর্তব্যরত হাসপাতালকর্মীদের মারধরে করার অভিযোগ আনা হয়েছে। সুজয়কে ভাঙচুরে যারা উস্কেছিল তাদের খোঁজও করছে পুলিশ।
কিন্তু কেন পাওয়া যাচ্ছে না টিকা? ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘কুকুরে কামড়ানোর প্রতিষেধক টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনে জানানোও হয়েছে।’’ জানা গিয়েছে, এই টিকার সরবরাহ সব সময় সব হাসপাতালে প্রচুর পরিমাণে থাকে না। জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, স্বাস্থ্য ভবন থেকে সরবরাহ হলেই তা হাসপাতালগুলিতে দেওয়া হয়।
হাসপাতালের উপর চড়াও হওয়ার এই ঘটনার নিন্দা করে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের কাকদ্বীপ শাখার নেতা বিশ্বনাথ জানা বলেন, ‘‘আগের চেয়ে পরিষেবা অনেকটাই বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। অনেক কম ডাক্তার নিয়ে পরিষেবা দিচ্ছে হাসপাতাল। এর মধ্যে এরকম ভাঙচুর করলে কাজের পরিবেশ নষ্ট হয়।’’