উত্তরপ্রদেশে রহস্য-মৃত্যু যুবকের

স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস দু’য়েক আগে সিরাজুল হক, সাকবাদ মণ্ডল ও আশাকুল ইসলাম নামে তিন যুবকের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে যান রণজিৎ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ০১:৪৮
Share:

রণজিৎ রায়

ভিন্ রাজ্যে চাকরি করতে গিয়ে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রণজিৎ রায় (২৩)। দেগঙ্গার নেতাজিপল্লির বাসিন্দা ওই যুবক উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে এক কারখানায় শ্রমিকের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন।

Advertisement

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাবাকে ফোন করে রণজিৎ বলেছিলেন, ‘আমার শরীর খুব খারাপ। তাই ওঝার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মাকে জানিও।’ এর পরে রাতভর চেষ্টা করেও ফোনে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি বাবা-মা। মাঝে কেউ এক জন ফোন ধরে বলেছিলেন, রণজিৎ ঘুমোচ্ছেন। পরদিন, শুক্রবার, অ্যাম্বুল্যান্সে করে সেই ছেলের দেহ ফিরল বাড়িতে।

গাজিপুরের জেলা হাসপাতালের তরফে দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে, বিষক্রিয়া। তবে সেই বিষক্রিয়া কী গোত্রের, তার কোনও উল্লেখ নেই। পতঙ্গের কামড় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে খোদ হাসপাতালই। আরও বিস্ময়কর হল, ময়না-তদন্ত না করেই দেহটি তড়িঘড়ি বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, কারখানার মালিকের তরফেও দেহ পৌঁছে দিতে কেউ আসেননি। যা নিয়ে এ দিন ক্ষোভে ফেটে পড়ে রণজিতের পরিবার ও এলাকার মানুষ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ। দেহের ময়না-তদন্তের পরেই সবটা জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস দু’য়েক আগে সিরাজুল হক, সাকবাদ মণ্ডল ও আশাকুল ইসলাম নামে তিন যুবকের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে যান রণজিৎ। শুক্রবার দুপুরে ওই তিন জনই অ্যাম্বুল্যান্সে করে রণজিতের দেহটি নিয়ে আসেন। পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্স চালক এবং ওই তিন যুবককে জেরা করছে।

পুলিশের কাছে ওই যুবকেরা দাবি করেছেন, বৃহস্পতিবার সকালে কাজে গিয়ে রণজিৎ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ানোর পরেও সুস্থ না হওয়ায় তাঁকে ওঝার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওঝার কেরামতিতেও কাজ না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই মারা যান রণজিৎ। অ্যাম্বুল্যান্স চালক মহম্মদ নাজির জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টায় তাঁর গাড়িটি ভাড়া নিয়ে তিন যুবকের সঙ্গে দেহটি পাঠানো হয়।

এ দিন রণজিতের মা মাধবীদেবী ও বোন রনিতা প্রশ্ন তোলেন, হাসপাতালে না নিয়ে কেন ওঝার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হল রণজিৎকে? বাবা অজয়বাবু বললেন, ‘‘কাল যার সঙ্গে কথা হল, আজ তারই দেহ বাড়িতে এল! কাল রাতে ফোন ধরে কেউ এক জন বলেছিল, আপনার ছেলে ঘুমোচ্ছে। পরে ফোন করবেন। তার পরে কখন কী ভাবে এ সব হল, কেউ জানায়নি।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন