ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু, অভিযোগ খুনের

শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গাঁধীপল্লি এলাকায় বনগাঁ-রানাঘাট শাখায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শশাঙ্ক দাস (২০)। বাড়ি গাঁধীপল্লি এলাকায়। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:১২
Share:

শশাঙ্ক দাস।

ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক যুবকের। জখম তাঁর এক সঙ্গী। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গাঁধীপল্লি এলাকায় বনগাঁ-রানাঘাট শাখায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শশাঙ্ক দাস (২০)। বাড়ি গাঁধীপল্লি এলাকায়।

Advertisement

মৃতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, শশাঙ্ককে নেশা করিয়ে চলন্ত ট্রেনের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ট্রেনের ধাক্কার তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁরা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে বোঝা যাবে, কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে বনগাঁ থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় শশাঙ্কের বন্ধু দেবা ঘোষ নামে এক যুবক জখম হয়েছেন। তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দর্জির কাজ করতেন শশাঙ্ক। মাস আটেক আগে বিয়ে করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় তিনিই। বাবা প্রদীপ শ্রমিকের কাজ করেন। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতে ছিলেন। খাওয়ার পরে রাত ৮টা নাগাদ শশাঙ্ক বাড়ি থেকে বেরোন। গোপালনগর থানা এলাকার সাতবেড়িয়ায় কালীপুজোর নিমন্ত্রণে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন। পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, শশাঙ্ক কালীপুজোর অনুষ্ঠানে যাননি।

স্থানীয় যুবক শোভন মান্না জানান, শশাঙ্ক সাইকেল নিয়ে সাতবেড়িয়া যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। এমন সময়ে এক যুবক শোভনের মোবাইলে ফোন করে। তাঁর ফোন থেকে শশাঙ্কের সঙ্গে কথা হয়। শোভন বলেন, ‘‘ওই ছেলেটাই শশাঙ্ককে বাড়ির কাছে রেললাইনের কাছে যেতে বলে। দাদা সেখানে চলে যান। মিনিট পাঁচেক পরে শব্দ শুনে লাইনের কাছে পৌঁছে দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় দাদা পড়ে রয়েছেন।’’ বাসিন্দারা তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

বনগাঁ জিআরপি জানিয়েছে, রানাঘাট থেকে বনগাঁগামী লোকাল ট্রেনের ধাক্কায় শশাঙ্কের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় রেল লাইনের পাশে শশাঙ্ক তাঁর তিন বন্ধুর সঙ্গে ছিলেন। জখম দেবা বলেন, ‘‘বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ ট্রেনের আওয়াজ পেয়ে আমাদের হুঁশ ফেরে। ততক্ষণে ট্রেন খুব কাছে চলে এসেছে। শশাঙ্ক আমাকে বাঁচাতে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। কিন্তু ও নিজে আর সরতে পারেনি। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে শশাঙ্ক মারা গেল।’’ যদিও দেবার কথা মানতে নারাজ মৃতের পরিবার। শশাঙ্কের স্ত্রী পুনম, মা রমা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। প্রতিবেশীদের ভিড় জমেছে টালি ইটের বাড়ির উঠোনে। রমা বলেন, ‘‘আমার ছেলে নেশা করে না। ওকে ডেকে নিয়ে গিয়ে নেশা করিয়ে ট্রেনের সামনে ধাক্কা মেরে খুন করা হয়েছে।’’ পুনম দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন