চাঁদা কম দেওয়ায় জুটল মার

মাত্র দু’শো টাকা দেওয়ার ‘অপরাধে’ শোরুমের মালিকের স্ত্রী ও ছেলের কপালে জুটল মারধর। শুধু তাই নয়, ভাঙচুর চালানো হয়েছে শোরুমটিতেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবড়া শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৮ ০১:৩১
Share:

অভিজিৎ দাস

বাইকের শোরুমে ঢুকে ওরা দাবি করেছিল মোটা টাকা চাঁদার। মাত্র দু’শো টাকা দেওয়ার ‘অপরাধে’ শোরুমের মালিকের স্ত্রী ও ছেলের কপালে জুটল মারধর। শুধু তাই নয়, ভাঙচুর চালানো হয়েছে শোরুমটিতেও। শনিবার সন্ধ্যায় হাবড়া থানার প্রতাপনগর এলাকায় এমন ঘটনার অভিযোগ উঠল কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে বেরিয়ে আসেন অভিজিৎ দাস নামে এক যুবক। তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত হয়েছেন ওই বাইকের শোরুমের মালিক প্রণব তালুকদারের স্ত্রী রেখাদেবী ও ছেলে প্রদীপ। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাতেই অনির্বাণ দাস নামে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

কী ঘটেছিল?

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়া ১ ব্লকের বেড়গুম ২ পঞ্চায়েত এলাকায় রবিবার দলের একটি সম্মেলন ছিল। অভিযোগ, ওই সম্মেলনের নাম করেই ওই যুবকেরা টাকা তুলছিল। টাকা তোলার সময়ে তারা নিজেদের এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান বিমল ঘোষের লোক বলেও পরিচয় দেয় বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রণববাবু প্রতাপনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে বাইকের শোরুম করেছেন। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ কয়েকজন যুবক প্রণববাবুর শোরুমে চড়াও হয়। প্রণববাবু তখন শোরুমে ছিলেন না। তাঁর ছেলে প্রদীপ ও স্ত্রী রেখাদেবী শোরুমে ছিলেন। রেখাদেবী বলেন, ‘‘ওই যুবকেরা এসে বলে, পঞ্চায়েত প্রধান বিমল ঘোষ তাদের পাঠিয়েছেন। সম্মেলনের জন্য চাঁদা দিতে হবে। আমার স্বামী শোরুমে থাকায় তাঁদের পরে আসতে বলি।’’ অভিযোগ, এরপরেই গালিগালাজ শুরু করে ওই যুবকেরা। তখন রেখাদেবী দু’শো টাকা তাদের হাতে দেন।

প্রদীপবাবু জানান, এরপরেই টাকা নিয়ে শুরু হয় বচসা। হঠাৎ তারা শোরুমের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করতে থাকে। তাঁকে কিল, চড় লাথিও মারা হয়। তাঁদের বাঁচাতে বেরিয়ে আসেন ওই বাড়ির মালিক অভিজিৎ। অভিযোগ, তাঁকেও ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ওই যুবকেরা।

রবিবার স্থানীয় বেড়গুম হাইস্কুলের মাঠে দলের সম্মেলন হয়। সেখানে দলের হাবড়া ১ ব্লকের সভাপতি অজিত সাহা বলেন, ‘‘দলের কেউ যদি দুর্নীতি ও তোলাবাজির ঘটনায় যুক্ত থাকেন তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’ শনিবারের ঘটনা শোনার পর অবশ্য তিনি বলেন, ‘‘দলের কেউ ওই কাজে যুক্ত কিনা জানা নেই। তবে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তবে দলের কেউ যুক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

হাবড়ার বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘অতীতে একবার বিমলবাবুকে সর্তক করে দেওয়া হয়েছিল। এ বার দল ঘটনার তদন্ত করছে। প্রমাণ মিললে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে প্রধানকে।’’ হাবড়া থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁরা এমন কাজ করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

পঞ্চায়েত প্রধান বিমলবাবু বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এই সম্মেলনের জন্য কারও কাছ থেকে টাকাও তোলা হয়নি। আমি এ ব্যাপারে খোঁজ নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন