কাজ বন্ধে নোটিস ফলতার কাগজকলে

কাজ বন্ধের নোটিস পড়ল ফলতার একটি কাগজকলে। যার জেরে কর্মহীন হলেন সংস্থার প্রায় ৩০০ স্থায়ী এবং ৩৫০ অস্থায়ী কর্মী। বৃহস্পতিবার কারখানার গেটে ওই নোটিস ঝুলিয়েছে কোহিনুর পেপার অ্যান্ড নিউজপ্রিন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আর্থিক দুরবস্থা ও কর্মীদের কাজে অনীহার কারণেই এই নোটিস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফলতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৫৭
Share:

কাজ বন্ধের নোটিস পড়ল ফলতার একটি কাগজকলে। যার জেরে কর্মহীন হলেন সংস্থার প্রায় ৩০০ স্থায়ী এবং ৩৫০ অস্থায়ী কর্মী। বৃহস্পতিবার কারখানার গেটে ওই নোটিস ঝুলিয়েছে কোহিনুর পেপার অ্যান্ড নিউজপ্রিন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আর্থিক দুরবস্থা ও কর্মীদের কাজে অনীহার কারণেই এই নোটিস। টাকা জোগাড় হলে ও কর্মীদের কাছ থেকে কাজের আশ্বাস পেলে চিন্তাভাবনা করা হবে। ফলতার সহকারী শ্রম কমিশনার চিরদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, দু’পক্ষকেই বৈঠকে ডাকার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

Advertisement

যদিও নোটিসে ১৭ ডিসেম্বরের তারিখ রয়েছে, কিন্তু কর্মীদের অভিযোগ, তাঁরা বুধবার কাজ সেরে ফেরার সময়ও কিছু দেখেননি। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে রাজ্য সরকারের শিল্প বিকাশ কেন্দ্রের সেক্টর ফাইভে ওই কোম্পানি উৎপাদন শুরু করে ২০১০ সালে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দীর্ঘ আর্থিক টানাটানির মধ্যে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ধার করে উৎপাদন চালু রাখা হয়েছিল। তার মধ্যেই কর্মীদের আচরণ এবং কাজে অনীহা এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ম্যানেজার শেখর সোনি বলেন, “ধার রয়েছে, তবে তা বিশাল কিছু নয়। কর্মীদের বিশৃঙ্খলায় ক্ষতি বাড়ছিল। কর্মীরা কাজের আশ্বাস দিলে সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেব।”

কর্মীদের পাল্টা দাবি, “এই অভিযোগ ঠিক নয়। মাইনের টাকা চাইতে গেলেই খারাপ ব্যবহার করা হতো। এ বার পুজোতেও বোনাস দেয়নি সংস্থা। সে সব নিয়ে বলতে গেলেই আমাদের বিরুদ্ধে কাজ না করার অভিযোগ তোলা হতো।” এই সংস্থায় এর আগে প্রায় ৮০০ জন কর্মী কাজ করতেন। ধীরে ধীরে অনেককেই বসিয়ে দিয়ে এখন তা ঠেকেছিল ৩০০ জনে। মাস চারেক আগে বসিয়ে দেওয়া হয় ৩৫০ জন অস্থায়ী কর্মীকে।

Advertisement

কর্মীদের আরও দাবি, তাঁরা নিয়মিত এসে দেখেছেন হাজিরা দেওয়া সত্ত্বেও অন্য কোনও কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। নোটিসেও বলা হয়েছে, বিদ্যুতের বিল বাকি থাকার জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় বেশ কিছু দিন কাজ হয়নি। কর্মীদের দাবি, তাঁরা পুরো উদ্যমেই কাজ করতে চান। তাঁরা চান, কোম্পানির কর্ণধারদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের এক মাসের বকেয়া পাওনা আপাতত মিটিয়ে উৎপাদন শুরু করা হোক। শ্রম আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনায় এই দাবিই তাঁরা তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন। এখানে শ্রমিকদের কোনও ইউনিয়ন নেই।

প্রায় সাড়ে তিন মাস মাইনে না পেয়ে কার্যত অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন অনেক শ্রমিক। স্থানীয় নীলা এলাকার কর্মচারী শেখ আবু বকর বলেন, “প্রায় আড়াই বছর ধরে কাজ করছি। এ রকম আগে হয়নি। পাওনাদারদের জন্য ঘর থেকে বেরোতে পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন