কিশোরী ছাত্রীর বিয়ে আটকে দিল প্রশাসন

প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হল এক নাবালিকার বিয়ে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর মাধ্যমে খবর আসে বিডিও পার্থ মণ্ডলের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৪ ০০:১৯
Share:

প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হল এক নাবালিকার বিয়ে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।

Advertisement

ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর মাধ্যমে খবর আসে বিডিও পার্থ মণ্ডলের কাছে। সেই কর্মী বিডিওকে বলেন, এই এলাকায় একটি নাবালিকা মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এ দিন রাতেই বিয়েটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় ওই কর্মী। পাত্রও নাবালক। খবর পেয়ে বিডিও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মহুয়া হালদারকে (বিশ্বাস) বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেন। ঘটনাস্থলে যান পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট আশিস মিত্র, উপপ্রধান সঞ্জিত পাণ্ডে ও পঞ্চায়েত সদস্য জয়কৃষ্ণ মণ্ডল। সকলের চেষ্টায় বন্ধ হয় বিয়ে।

১৩ বছরের ওই মেয়েটি সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। বাড়ি স্থানীয় বেড়ি এলাকায়। এই বিয়েতে সে রাজি নয় ঠিকই, কিন্তু মায়ের কথা অমান্য করার উপায় নেই। ছেলেটিও বিয়ের জন্য সাবালক নয়, বয়স ১৮। একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করে সে। পাড়ুইপাড়ায় মামার বাড়িতে থাকে। বিয়ে মামার বাড়িতেই হওয়ার কথা ছিল। দু’টি পরিবারের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল নয়।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ের মা ও ছেলের মা দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মূলত, তাঁদের ইচ্ছাতেই বিয়েটা হচ্ছিল। প্রশাসন ঘটনাস্থলে গেলে প্রথমে তাঁদের সঙ্গে দুই পরিবারে বচসা বাধে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেয়ের মাকে বোঝানো হয়, মেয়ের বয়স আঠারো এবং ছেলের একুশ না হলে বিয়েতে কী সমস্যা হতে পারে। নাবালিকার বিয়ে হলে সন্তান জন্মালে শংসাপত্র পাওয়া যায় না। নাবালিকা বাচ্চাটিও অপুষ্টিতে ভোগে। এমনকী, বাচ্চা হতে গিয়ে মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। মেয়ের মা বলেন, “মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে তখন যদি ভাল ছেলে না পাওয়া যায়, তার তড়িঘড়ি বিয়ের কথা ভেবেছিলেন।” এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে পঞ্চায়েত সহযোগিতা করবে বলে আশিসবাবু আশ্বাস দেন। শুধু তাই নয়, মেয়েটির পড়াশোনার জন্যও পঞ্চায়েত থেকে সাহায্য করা হবে বলে জানানো হয়।

মেয়ের মা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হন। পাত্রের মামা তখনও চিত্‌কার চেঁচামেচি করছিলেন। প্রশাসন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কেউ যদি এরপরেও গোপনে নাবালিকার বিয়ে দেন, তা হলে যিনি বিয়ে দেবেন বা যাঁরা আয়োজন করবেন সকলকে আইনত শাস্তি দেওয়া হবে। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও জেলে ঢোকানো হবে। শুক্রবার ছেলের মামাবাড়ির লোকজন জানান, ছেলে-মেয়ের ষষ্ঠী পুজো হচ্ছিল। বিয়ের ব্যবস্থা হয়নি। বিডিও পার্থ মণ্ডল অবশ্য বলেন, “বৃহস্পতিবারই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এখন দু’পক্ষই তা অস্বীকার করছেন।” ভবিষ্যতে যাতে এই পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে দিকে প্রশাসন নজর রাখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন