থানায় অভিযোগ জানিয়ে খুন যুবক, সাসপেন্ড পুলিশ

সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ জানানো হয়েছিল থানায়। পুলিশ গিয়েছিল তদন্তে। তারই কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে খুন হয়ে যান অভিযোগকারী এক যুবক। গত ১৬ ডিসেম্বর বসিরহাটের সাঁইপালার ওই ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে থানার আইসি সৌমশান্ত পাহাড়িকে। দিন কয়েক আগে একই অভিযোগে সাসপেন্ড হয়েছেন থানার এক এসআই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫১
Share:

সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ জানানো হয়েছিল থানায়। পুলিশ গিয়েছিল তদন্তে। তারই কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে খুন হয়ে যান অভিযোগকারী এক যুবক। গত ১৬ ডিসেম্বর বসিরহাটের সাঁইপালার ওই ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে থানার আইসি সৌমশান্ত পাহাড়িকে। দিন কয়েক আগে একই অভিযোগে সাসপেন্ড হয়েছেন থানার এক এসআই। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) গৌরব লাল জানান, বসিরহাট থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিআইকে। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সৌমশান্তবাবুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisement

পুলিশ জানায়, সাঁইপালার প্রোমোটার বাপ্পা বসুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকায় বেশ কিছু দিন এলাকা ছাড়া তিনি। ১৬ ডিসেম্বর তাঁর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় সশস্ত্র এক দল দুষ্কৃতী। স্ত্রী জয়শ্রীদেবীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে গেলে পালায় হামলাকারীরা। ভাই দেবাশিস বিশ্বাস ওরফে বাবাইকে সঙ্গে নিয়ে ওই সন্ধ্যাতেই থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন জয়শ্রীদেবী। তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলেও লিখিত ভাবে জানান পুলিশকে। সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া মোটরবাইকটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

থানা থেকে ফিরে দিদি জয়শ্রীকে সাঁইপালাতেই নিজের বাড়িতে নিয়ে যান দেবাশিস। তারপর বাড়ির বাইরে বেরোন। রাত ১০টা নাগাদ বাড়ির কাছেই এক দল দুষ্কৃতী তাঁর উপরে বোমা-গুলি নিয়ে হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই যুবক।

Advertisement

দুষ্কৃতীদের নামে নির্দিষ্ট অভিযোগ করা সত্ত্বেও পুলিশ কেন অভিযোগকারীদের নিরাপত্তা দিতে পারল না, সেই প্রশ্ন ওঠে। জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গাফিলতির অভিযোগে শো-কজ করা হয় আইসিকে। ঘটনার দু’দিন বাদে, গত ১৮ ডিসেম্বর থানার এসআই প্রতীক বসুকে সাসপেন্ড করা হয়।

২৫ তারিখ সাসপেন্ড হন আইসি। খুনের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জন-সহ ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।”

জেলা পুলিশেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত কয়েক মাসে নানা ঘটনায় জেলা তৃণমূলের প্রভাবশালী একটি অংশের বিরাগভাজন হয়েছিলেন আইসি। দুর্গাপুজোয় ভাসানকে কেন্দ্র করে বসিরহাটে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছিল। ওই ঘটনায় ক্লাবগুলির মধ্যে সমন্বয়সাধনের ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা সমালোচিত হয়। সম্প্রতি চুরি-ছিনতাইও বেড়েছিল। ঘোজাডাঙা সীমান্তে শাসক দলের মদতপুষ্ট কিছু লোক ট্রাক আটকে তোলাবাজি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ক’দিন আগে। জেলা তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতার নির্দেশের পরেও ওই ঘটনায় আইসি যথেষ্ট কড়া পদক্ষেপ করতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। ১৬ ডিসেম্বরের ঘটনায় আইসি-র ভূমিকা নিয়েও সমালোচনার ঝড় ওঠায় তাঁকে সরিয়ে দিতে আর দেরি করেনি জেলা পুলিশ। তৃণমূলের জেলা নেতাদের কেউ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন