কিশোর সঙ্ঘের পুজো।
দেবী দুর্গার আরাধনায় যখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ব্যস্ত, তখন বিশেষ হেলদোল থাকে না মথুরাপুরের সদিয়াল গ্রামের মানুষের। তাঁরা অপেক্ষা করে থাকেন লক্ষ্মীপুজোর দিনটির জন্য। এলাকার বড় উৎসব তো এই পুজোই।
রায়দিঘি-ডায়মন্ড হারবার রোডে শোভানগর মোড়ে নেমে মিনিট পনেরো হাঁটলেই সদিয়াল গ্রাম। বেশির ভাগ মানুষই মৎস্যজীবী। সাধ থাকলেও বহু টাকা ব্যয় করে দুর্গা পুজো করা তাঁদের সাধ্যের বাইরে। সে সব সাত-পাঁচ ভেবে বছর কুড়ি আগে এই গ্রামের মানুষজন সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা করবেন।
সেই থেকে ঘটা করে শুরু হয় লক্ষ্মী পুজো। গ্রামে আগে একটিই পুজো হত। কিন্তু এখন জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে আরও একটি পুজো। বাপি হালদার, মহাশ্বেতা হালদার এবং শচীন বিশ্বাস নামে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “পাশের গ্রামের বাসিন্দারা যখন নতুন জামা-কাপড় পরে দুর্গা ঠাকুর দেখতে বেরোয়, আমরা তখন লক্ষ্মী মায়ের আগমনের অপেক্ষায় থাকি। এই দিনেই নতুন পোশাক পরি। বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনেরা আসেন।” গ্রামের মানুষের বক্তব্য, “এখানে সকলেই প্রায় দরিদ্র পরিবার। ধনের দেবী লক্ষ্মীকে আরাধনা করে যদি জীবনযাপনে কিছুটা সুরাহা হয়, সেটাই ধনের দেবীর আরাধনা করার একটা কারণ।”
আমরা সবাই। ছবি: দিলীপ নস্কর।
গ্রামে ঢোকার মুখে রাস্তার উপরে তৈরি হয়েছে ‘আমরা সবাই জনকল্যাণ সমিতির’ মণ্ডপ। সামনে লাগানো হয়েছে চন্দননগরের আলোর দু’টি গেট। তালপাতার প্রতিমা। মণ্ডপটি দক্ষিণ ভারতের বুদ্ধ মন্দিরের আদলে তৈরি। পুজো উপলক্ষে ছ’দিন ধরে চলবে উৎসব। প্রত্যেক দিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ওই পুজা মণ্ডপ ছাড়িয়ে মিনিট কয়েক এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে ‘পূর্বপল্লি কিশোর সঙ্ঘের’ মণ্ডপ। মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ। এই পুজোই প্রথম শুরু হয়েছিল এলাকায়।