পুজো মণ্ডপে গোলমাল, গুলিতে নিহত ২ জন

রাতদুপুরে গাঁক গাঁক করে মাইক বাজছিল গায়ে গায়ে গণেশ পুজোর দু’টি মণ্ডপে। এক দল যুবক মদ্যপ অবস্থায় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাচানাচি করছিল বলে অভিযোগ। অন্য দল বাধা দিলে মারপিট বেধে যায় দু’পক্ষের। গুলি লেগে মারা যান এক জন। যার জেরে মণ্ডপ থেকে তুলে এনে গুলি করে খুন করা হয় আরও এক জনকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪৭
Share:

বাঁ দিক থেকে, বিজয় পাসোয়ান ও রবি মণ্ডল।

রাতদুপুরে গাঁক গাঁক করে মাইক বাজছিল গায়ে গায়ে গণেশ পুজোর দু’টি মণ্ডপে। এক দল যুবক মদ্যপ অবস্থায় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাচানাচি করছিল বলে অভিযোগ। অন্য দল বাধা দিলে মারপিট বেধে যায় দু’পক্ষের। গুলি লেগে মারা যান এক জন। যার জেরে মণ্ডপ থেকে তুলে এনে গুলি করে খুন করা হয় আরও এক জনকে।

Advertisement

সোমবার রাতে এই ঘটনায় জগদ্দলের ১২ নম্বর গলির গোয়ালাপাড়া আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম বিজয় পাসোয়ান (২৭) ও রবি মণ্ডল (৪০)। খুনের অভিযোগে সুরেশ চৌধুরী নামে এক দুষ্কৃতী ও তার দলবলকে খুঁজছে পুলিশ। কোনও পুজোরই কোনও অনুমতি ছিল না বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে জানিয়েছে তারা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কুলিলাইনের ওই এলাকাটিতে বহু অবাঙালির বসবাস। বেশির ভাগই দরিদ্র পরিবার। গত কয়েক বছর ধরেই সেখানে গণেশ পুজোর হিড়িক বেড়েছে। গায়ে গায়ে ছোট্ট মণ্ডপে বক্স বাজিয়ে পুজো হয়। তা নিয়ে হই-হুল্লোড় চলে কয়েক দিন ধরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, রেলওয়ে সাইডিংয়ের পুজো মণ্ডপে সোমবার রাতে প্রবল জোরে বক্স বাজানো হচ্ছিল। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পকেট থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে নাচানাচি করছিল কেউ কেউ। সে সব দেখে প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসে পাশেই মিষ্টিপুকুর পুজো কমিটির কয়েক জন। এই নিয়ে দু’পক্ষের গোলমাল বাধে।

Advertisement

আচমকাই ভিড়ের মধ্যে গুলি চলে। রবি মণ্ডল নামে এক চপ বিক্রেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ঘটনাস্থলেই। রবির ওঠাবসা ছিল রেলওয়ে সাইডিংয়ের ছেলেদের সঙ্গে। মিষ্টিপুকুরের ছেলেরা গুলি করে তাঁকে খুন করেছে, এই অভিযোগে সাইডিংয়ের ছেলেরা হইহই করে হাজির হয় মিষ্টিপুকুরের পুজো মণ্ডপে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে তখন শুয়ে ছিলেন বিজয়। রাত ১০টা নাগাদ চটকলে কাজ সেরে বাড়ি ফিরে মণ্ডপে এসেছিলেন তিনি। বিজয়কে বাইরে টেনে বের করে আনে সুরেশ এবং আরও কয়েক জন। ওয়ানশটার থেকে গুলি করে খুন করা হয় তাঁকে। দু’জনকেই ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। নিহত দু’জনের পরিবারের তরফে মঙ্গলবার জগদ্দল থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দু’টি দেহই ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের অনুমান, বিজয়ের সঙ্গে সুরেশের পুরনো গোলমাল ছিল। রবির উপরে কারও হামলা চালানোর উদ্দেশ্য ছিল না বলেই মনে করছেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান সি সুধাকর। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। বেশি রাতে মাইক বাজানো বা অস্ত্র নিয়ে নাচানাচির যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন