কুপিয়ে খুন করার পরে অস্ত্র ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। হিঙ্গলগঞ্জের শিক্ষিকা ফুলরেণু সরকারকে খুনের তদন্তে নেমে মঙ্গলবার এই তথ্য পেল পুলিশ।
এ দিন কনকনগরের ওই বাড়িতে যান বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘরে রক্তমাখা পায়ের ছাপ দেওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। একটি ঘরে রাখা বালতির জলে খুনের জন্য ব্যবহৃত ধারাল অস্ত্র ধুয়ে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল বলে তদন্তকারী অফিসারদের নজরে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে ফুলরেণুর মোবাইলটি নিয়েছে পুলিশ।
এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ ধরা না পড়লেও গ্রামের এক ব্যক্তিকে দু’দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। এর সঙ্গে খুনের ঘটনার কোনও যোগসূত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গ্রামের আরও এক ব্যক্তির কিছু অস্বাভাবিক আচরণের কথা পুলিশকে জানিয়েছেন পড়শিরা। পুলিশ জানতে পেরেছে, এক মহিলা ও তাঁর পুরুষ বন্ধুর যাতায়াত ছিল ফুলরেণুর বাড়িতে। খুনের ঘটনার পর থেকে তাঁদের খোঁজ নেই। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশকর্তারা। খুব শীঘ্রই অপরাধী চিহ্নিত হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
সোমবার ভোরে নিজের বাড়িতেই রক্তাক্ত অবস্থায় ফুলরেণুর দেহ মেলে। দোতলা বাড়িতে একাই থাকতেন বছর বেয়াল্লিশের ওই মহিলা। পড়াতেন রামকৃষ্ণ মিশনের স্থানীয় শাখার প্রাথমিক স্কুলে। দিদিমনি ক্লাসে আসছেন না দেখে স্কুলের কয়েক জন খুদে পড়ুয়ারা তাঁকে গিয়েছিল বাড়ি থেকে ডাকতে। তখনই ঘটনা জানাজানি হয়।
ফুলরেণুর ছেলে শঙ্কর বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা মাকে নানা ভাবে বিরক্ত করত। তারা চাই তো না, আমরা গ্রামে থাকি। মা আমার কাছে কোনও কিছুই গোপন করতেন না।” স্ত্রীর সঙ্গে রাতে মোবাইলে যোগাযোগ করতে না পেরে ফুলরেণুর স্বামী দীনবন্ধু যোগাযোগ করেছিলেন ছেলের সঙ্গে। সকালে ঘটনা জানতে পারেন তাঁরা।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ছোটখাটো কোনও বিষয়ের জন্য মহিলাকে এমন নৃশংস ভাবে খুন করা হয়নি। যে ভাবে কোপানো হয়েছে, তাতে ভয়ঙ্কর কোনও আক্রোশ থেকেই এই হামলা বলে অনুমান করা হচ্ছে।