বিদেশি জাহাজের পণ্য সরবরাহের কাজে শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিটের জেরে আইএনটিটিইউসি নেতা নারায়ণ ভট্টাচার্য ও এক পঞ্চায়েত সদস্য তাপস মল্লিক-সহ এগারো জনকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার ডায়মন্ড হারবার আদালতে ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিদেশি জাহাজে নিয়ে আসা কাঠ, মোটর-সহ বিভিন্নসামগ্রী সরাসরি খিদিরপুর বন্দরে ঢুকতে পারে না। ডায়মন্ড হারবারের আবদালপুর ও কালীচরণপুর গ্রামের কাছে হুগলি নদীতে জাহাজ নোঙর করে বার্জে নামিয়ে খিদিরপুর বন্দরে পাঠানো হয়। যখন যে দলের ইউনিয়ন ক্ষমতায় থাকে, তখন সেই দলের সদস্যেরাই পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ওই দলের ডায়মন্ড হারবার-কলকাতা বন্দর শ্রমিক কমর্চারী ইউনিয়নের পক্ষে স্থানীয় নেতা প্রতাপ হালদারের নেতৃত্বে পণ্য ওঠানো নামানোর কাজ চলছে। তিনি বিধায়ক দীপক হালদারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অন্য দিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা তুষার হালদারের নেতৃত্বে শ্রমিকদের নিয়ে গড়ে ওঠে ডায়মন্ড হারবার-কলকাতা পোস্ট কনট্রাক্টর ওয়াকার্স ইউনিয়ন। পণ্য ওঠানো নামানো নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। অভিযোগ, শনিবার রাতে নারায়ণবাবু ও তাপস মল্লিক-সহ তুষারবাবুর গোষ্ঠীর লোকজন জাহাজে গিয়ে চড়াও হয়। মালপত্র লুঠপাট করে। তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করে তুষারবাবুর বক্তব্য, “পণ্য খালাসের কাজের জন্য আমাদের ইউনিয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তিন বছরের চুক্তি রয়েছে। অথচ দিনের পর দিন কাজ পাচ্ছে না। শনিবার বিকেলে কাজের দাবি নিয়ে খিদিরপুর বন্দরে গিয়েছিলাম। ক্ষমতাবলে দীপকবাবু আমাদের ১১ জনকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছেন।” তবে দীপকবাবুর বক্তব্য, “শুনেছি, ওই রাতে বেশ কিছু দুষ্কৃতী জাহাজের নোঙর কেটে মালপত্র লুঠপাট করেছে। কিছু ধান্দাবাজ লোক তৃণমূলে ঢুকে দলটাকে শেষ করে দিতে চাইছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে ওরা।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগেও পণ্য নামানো নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে বেশ কিছু দিন কাজ বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কাজ চালু হয়।