মেলায় বসছে জুয়ার আসর, অভিযোগ হিঙ্গলগঞ্জের গ্রামে

জুয়ার ঠেক বসানোর অভিযোগ উঠল মেলা কমিটির বিরুদ্ধে। হিঙ্গলগঞ্জের সুন্দরবন লাগোয়া কালীতলা পঞ্চায়েত এলাকার ওই মেলার উদ্যোক্তারা অবশ্য অভিযোগ খারিজ করেছেন। তবে এলাকার মানুষের দাবি, কেবল এই একটি মেলাই নয়, শীতের ফসল ঘরে উঠতেই একটি চক্র বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এ ধরনের মেলার আয়োজন করে। তার পর পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের সহযোগিতায় মেলার নামে প্রকাশ্যে জুয়া খেলার ব্যবস্থা করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৪
Share:

জুয়ার ঠেক বসানোর অভিযোগ উঠল মেলা কমিটির বিরুদ্ধে। হিঙ্গলগঞ্জের সুন্দরবন লাগোয়া কালীতলা পঞ্চায়েত এলাকার ওই মেলার উদ্যোক্তারা অবশ্য অভিযোগ খারিজ করেছেন। তবে এলাকার মানুষের দাবি, কেবল এই একটি মেলাই নয়, শীতের ফসল ঘরে উঠতেই একটি চক্র বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এ ধরনের মেলার আয়োজন করে। তার পর পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের সহযোগিতায় মেলার নামে প্রকাশ্যে জুয়া খেলার ব্যবস্থা করা হয়।

Advertisement

ঠেক বন্ধের বিষয়ে স্থানীয় হেমনগর উপকূলবর্তী থানা এবং বিডিওর কাছে আবেদন জানান হিঙ্গলগঞ্জ নাগরিক সমিতির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। তিনি বলেন, “প্রতিবাদ করলে হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, দয়া করে জুয়া বন্ধ করুন। না হলে রাস্তায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” এক ফসলি সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় শীতের শুরু থেকেই বিভিন্ন দেবদেবীর নামে একের পর এক মেলা শুরু হয়, যার মূল আকর্ষণই জুয়ার ঠেক। শীতের ধান বিক্রির টাকা হাতে থাকায় গ্রামের মানুষও জুয়ায় মাতেন। হিঙ্গলগঞ্জের এই মেলাটি ছাড়া বসিরহাট মহকুমার বাকি আটটি থানা এলাকার বিভিন্ন মেলাতেও জুয়ার ঠেক বসে। এ বিষয়ে বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “কোন মেলায় জুয়া খেলা হচ্ছে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সন্ধের ‘ড্যান্স হাঙ্গামা’-র আসরের উত্তেজনার পাশাপাশি মদ এবং জুয়ার নেশায় মানুষের মধ্যে হাতাহাতি থেকে মারধর পর্যন্ত বেধে যায়। পুলিশকে এসে প্রায়শই যে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। অথচ সব জানা সত্ত্বেও পুলিশ বা প্রশাসন নির্বিকার। এক পুলিশ কর্তা বললেন, “ওই চক্রের সদস্যেরাই পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মেলার অনুমতি নেয়। তার পর নাচের আসর বসিয়ে মানুষকে টেনে আনে জুয়ার ঠেকে। পুলিশ-প্রশাসনও তাদের কাছে বিশেষ সুবিধা নেয়, ফলে মুখ খুলতে পারে না। এ কারণেই এ ধরনের অপরাধ হয়ে চলেছে। মেলা বন্ধ করা দূর, উল্টে নানা ভাবে সাহায্য করে তারা মেলা উদ্যোক্তাদের।”

Advertisement

তাঁর বক্তব্য, “আগে গ্রামের ছেলেরা এলাকার মানুষকে আনন্দ দিতে মেলার আয়োজন করত। আর এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেলার আয়োজন করে বিশেষ একটি চক্র।” তিনি আরও জানান, তারা প্রথমে গ্রামের ক্লাবে যোগাযোগ করে। পরে তাঁদের সিল-প্যাড ব্যবহার করে তাঁদের মাঠ ব্যবহার করেই শুরু হয় মেলা। সব শেষে এ সব ফন্দি ফিকিরে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন গ্রামের গরিব মানুষই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন