নতুন ভূমিকায়। শুক্রবার বসিরহাটে নির্মল বসুর তোলা ছবি।
মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাস। শুক্রবার মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা করার পরে আত্মবিশ্বাসী দীপেন্দু বলেন, “প্রতিপক্ষের ডিফেন্স শক্ত হলেও এতো দিন যে ভাবে তাদের পরাস্ত করে গোল দিয়েছি, আশা করছি এ বারেও তেমনটা পারব।”
এ দিন দলের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেওয়া উপলক্ষে বসিরহাটে এসেছিলেন তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, “ভারত ও বাংলার হয়ে অধিনায়কত্ব করা বসিরহাটের ভূমিপুত্র দীপেন্দুর উপরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভরসা রাখায় বসিরহাটের মানুষ খুশি। ওঁর জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
এ দিন সকালে বদরতলায় বাড়িতে বাবা-মাকে প্রণাম করে বেরিয়েছিলেন দীপেন্দু। গিয়েছিলেন বসিরহাটের ইছামতী নদীর ধারে জোড়াকালীবাড়িতে। সেখান থেকে যান ধলতিথায় পীরবাবুর দরবারে। বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে বসিরহাট পুরসভায় উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সইসাবুদ শেষ করেন। দেড়টা নাগাদ পুরসভার সামনে থেকে দীপেন্দুকে মিছিলে করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পা মেলান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি কৃষ্ণগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী, মধ্যমগ্রাম এবং টাকির পুরপ্রধান রথীন ঘোষ ও সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। ছিলেন আরও বেশ কয়েক জন নেতা। পাঁচ প্রতিনিধিকে নিয়ে দীপেন্দু যান মহকুমাশাসক শেখর সেনের দফতরে দীপেন্দুর হয়ে প্রস্তাবক হন নজরুল হক, শচীন পাত্র, সোমনাথ মুখোপাধ্যায় এবং বিভূ চট্টোপাধ্যায়।
মহকুমাশাসকের দফতরে যখন মনোনয়নপত্র খতিয়ে দেখার কাজ চলছে, সে সময়ে বসিরহাটে পৌঁছন জ্যোতিপ্রিয়াবু। ইছামতীর ধারে বাস ইউনিয়নের দফতরে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠকের পরে জ্যোতিপ্রিয়াবু বলেন, “গত চার মাসেই মোদীর ভাঁওতা মানুষ ধরে ফেলেছে। ফলে বিজেপির প্রতি মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে। বসিরহাটও তার ব্যতিক্রম নয়। লোকসভায় যে ভোট ওরা পেয়েছিল, উপনির্বাচনে তা পাবে না।” বসিরহাটের উন্নয়নকে সামনে রেখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মমতার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা বলা হবে বলে জানান তিনি। আরও জানান, বসিরহাটবাসীদের জন্য পানীয় জল এবং নিকাশির সার্ভের কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তার উন্নয়নের জন্য ফিরহাদ হাকিমের সাথে কথা হয়েছে।’’
বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভায় দীর্ঘ বছর ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। আট বারের বিধায়ক ছিলেন নারায়ণ মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি তাঁর মৃত্যুতে এই আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আসার পরে খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে খানিকটা পা মিলিয়ে হাঁটার পরে তৃণমূলের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়। টাটা অ্যাকাডেমির প্রাক্তন ছাত্র দীপেন্দু বলেন, “ফুটবল এবং শহরবাসীদের উন্নয়নই হবে আমার একমাত্র লক্ষ্য। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান এবং মহেন্দ্র ইউনাইট ক্লাবে খেলেছি। এ বারে মহামেডান সই করার কথা। মমতাদিদির উন্নয়নমূলক কাজ এবং তাঁর আদর্শে মুগ্ধ হয়ে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া। তবে প্রচারের মধ্যে সুযোগ পেলেই ফুটবল খেলব।’’ দীপেন্দুর কথায়, “রাজনীতি আর ফুটবল দু’টো লড়াই দু’রকম। তবে দু’টোই কঠিন।”