গাড়ি গেলে যে অবস্থা হয় রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।
বাস বা কোনও যানবাহন গেলেই ধুলোয় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। দম বন্ধ হওয়ার জোগাড় পথ চলতি মানুষ থেকে রাস্তার পাশের দোকানদাকদের।
দিনের পর দিন এমনই প্রাণান্তকর অবস্থা ঘোষপাড়া প্রধান সড়কের শ্যামনগর পাওয়ার হাউস গোপবন্ধু মোড় বাস স্টপেজের। শেষ বর্ষায় রাস্তার গর্ত ঢাকতে ইটের খোয়া ফেলা হয়েছিল। যান চলাচলের চাপে সেই খোয়া সুরকিতে পরিণত হয়েছে। তার উপর দিয়ে গাড়ি গেলেই ধুলোয় ত্রাহি ত্রাহি রব পথচারীদের।
বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক যাত্রী বলেন, “বাস ধরার জন্য দাঁড়িয়ে থাকলে ধুলোয় স্নান করতে হয়।” রাস্তার পাশেই চপ-ফুলুরির দোকান বাপ্পা সিংহের। তেলেভাজা তৈরির সময়ে কোনও মতে সামনে পর্দা টাঙিয়ে কাজ করতে হয়। পাশের পান-বিড়ি ব্যবসায়ী শঙ্কর প্রসাদ, প্রকাশ জেনারা বলেন, “প্রতি দিন চার-পাঁচ বার করে শো- কেস, জারের ধুলো ঝাড়তে হয়। না হলে কোন জিনিস, কোথায় আছে বোঝা যায় না।”
ভাটপাড়া পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার খুশবুন্নিশা বলেন, “ওই জায়গায় মাটির তলা দিয়ে নিকাশি নালা তৈরির কথা। তার পরই রাস্তার কাজ করা যাবে।” তবে তার সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “এই রাস্তার কাজ পিডব্লুডি দফতরের আওতায় পড়ে। ওদের জানাব, নিকাশি নালার কাজ শুরু হওয়ার আগে পিচিং করে যাতে ধুলো বন্ধে ব্যবস্থা নেয়।” ঘোষপাড়া রোডের দায়িত্বপ্রাপ্ত পিডব্লুডি ইঞ্জিনিয়ার পূর্ণচন্দ্র দাস বলেন, “নিকাশি নালা না হলে রাস্তার কাজ করা যাবে না। ওর উপর পিচ ফেললে টাকা জলে যাবে।”
ভাটপাড়ার পুরসভার চেয়ারম্যান অর্জুন সিংহ বলেন, “পিডব্লুডি সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলছে।” তিনি জানান, এক বছর আগে পিডব্লুডি-র সঙ্গে একটা মিটিং-এ ঠিক হয়ে গিয়েছিল ঘোষপাড়ার নিকাশি নালায় কোনও নতুন কাজ হবে না। যেমন ছিল তেমনই থাকবে। সব কাগজপত্র রয়েছে। বারবার ওদের রাস্তা করার জন্য তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। অথচ কোনও হেলদোল নেই।
কেএমডিএ-র আধিকারিক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের একটা কেন্দ্রীয় প্রকল্প রয়েছে ওই রাস্তার তলায় নিকাশি নালা সারানোর। জানি না অর্জুনবাবু বিষয়টি সম্পর্কে কতটা ওয়াকিবহাল। পুর-ইঞ্জিনিয়াররা নিশ্চয়ই জানবেন।” চন্দনবাবু আরও বলেন, “উনি এক বছর আগে নিকাশির কাজ বন্ধ করে রাস্তা তৈরির যে কথা বলছেন, তার কোনও কাগজ আমরা পাইনি। এখন যদি উনি বলেন, নিকাশির কাজ হবে না, আমাদেরই পয়সা বেঁচে যায়। সে ক্ষেত্রে উনি রাস্তা তৈরির আবেদন জানিয়ে চিঠি দিলে সে ভাবেই ব্যবস্থা নেব।”