স্ত্রীকে অ্যাসিড ছুড়ে ধৃত স্বামী, জালে বিক্রেতাও

হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে স্ত্রীর গায়ে অ্যাসিড ছুড়ল স্বামী। মঙ্গলবার হাবরার ওই ঘটনায় ধরা পড়েছে অভিযুক্ত যুবক। যে মুদির দোকান থেকে অ্যাসিড কিনেছিল সে, গ্রেফতার করা হয়েছে ওই দোকানের মালিককেও। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের দাবি, এই প্রথম অ্যাসিড-আক্রমণের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল কোনও অ্যাসিড বিক্রেতাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:১৯
Share:

অ্যাসিড কাণ্ডে ধৃত গৌতম মণ্ডল। ছবি: শান্তনু হালদার।

হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে স্ত্রীর গায়ে অ্যাসিড ছুড়ল স্বামী। মঙ্গলবার হাবরার ওই ঘটনায় ধরা পড়েছে অভিযুক্ত যুবক। যে মুদির দোকান থেকে অ্যাসিড কিনেছিল সে, গ্রেফতার করা হয়েছে ওই দোকানের মালিককেও। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের দাবি, এই প্রথম অ্যাসিড-আক্রমণের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল কোনও অ্যাসিড বিক্রেতাকে। বিধান মণ্ডল নামে হাবরা বাজার এলাকার ওই ব্যবসায়ীর কাছে অ্যাসিড বিক্রির লাইসেন্স ছিল না বলেই জানিয়েছে পুলিশ। আটক অ্যাসিডের নমুনা বেলগাছিয়ার ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগরের নন্দনকানন এলাকার বাসিন্দা গৌতম মণ্ডলের সঙ্গে কয়েক বছর আগে বিয়ে হয় নমিতার। তন্ময় নামে তাঁদের বছর ছ’য়েকের ছেলে আছে। অভিযোগ, নারায়ণ সিকদার নামে স্থানীয় পিএল ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে নমিতা দেবীর বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্ক তৈরি হয়। মাস খানেক আগে নমিতা বাড়ি ছেড়ে নারায়ণের সঙ্গে চলে যান। তন্ময় থাকত বাবার কাছেই।

তন্ময়ের ডায়েরিয়া হওয়ায় সোমবার বিকেলে তাকে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শাশুড়ির কাছ থেকে খবর পেয়ে নমিতা ছেলেকে দেখতে রাতের দিকে হাসপাতালে আসেন। নমিতার সঙ্গে ছিলেন নারায়ণ। সেখানে হাজির হয় গৌতম। তিন জনের বচসা বাধে। মদ্যপ অবস্থায় গোলমাল পাকানোর অভিযোগে পুলিশ এসে সোমবার রাতেই নারায়ণকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

এই হাসপাতালে শিশুবিভাগ না থাকায় ছোটদের ভর্তি করা হয় মহিলা ওয়ার্ডে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ গৌতম ওয়ার্ডে ঢুকে স্ত্রীকে লক্ষ্য করে আচমকাই অ্যাসিড ছোড়ে বলে অভিযোগ। গৌতমের মা মালতীদেবী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। হইচইয়ের মধ্যে অ্যাসিড ছিটকে অন্য রোগিণী ও তাঁদের কয়েক জন আত্মীয়াদের শরীরেও অ্যাসিড ছিটকে লাগে। তন্ময়ের পায়েও অ্যাসিডের ফোঁটা এসে পড়ে।

কর্তব্যরত আয়া শিবানী ভৌমিক বলেন, “হঠাৎ দেখি এক মহিলাকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছুড়ছে। ঠেকাতে গেলে ওই যুবক আমাদের দিকেও অ্যাসিড ছোড়ে। আমার বুকে লেগেছে। বোতলটা কেড়ে নিয়ে ওকে এক চড় মারি।” পুলিশ এসে গ্রেফতার করে গৌতমকে। ধৃত বিধান ও গৌতমকে বারাসত আদালত ১৪ দিনের জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এ দিন জামিনে ছাড়া পেয়েছেন নারায়ণ।

এ দিকে, গোটা ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর আত্মীয়েরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় কুমার আচার্য অবশ্য বলেন, “নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিকই ছিল। কয়েক দিন আগে জেলার সমস্ত বিএমওএইচ এবং হাসপাতাল সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হাসপাতালে বহিরাগতদের ঢোকা নিয়ন্ত্রণ করতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ দিনের ঘটনা রোগীর আত্মীয়ই ঘটিয়েছেন, কোনও বহিরাগত নয়। তদন্ত শুরু হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন