স্ত্রী-মেয়েকে বাড়ি ফেরাতে ভাইপোকে অপহরণ হাবরায়

ছ’বছরের ভাইপোকে অপহরণ ও খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হল কাকা। মঙ্গলবার রাতে গোপালনগর দাসপাড়া এলাকা থেকে জয়ন্ত দাস নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করল হাবরা থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে নিজের বাড়িতে ঠাঁই করে দেওয়ার জন্য পরিবারের উপরে চাপ সৃষ্টি করতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে জয়ন্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩৭
Share:

ছ’বছরের ভাইপোকে অপহরণ ও খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হল কাকা। মঙ্গলবার রাতে গোপালনগর দাসপাড়া এলাকা থেকে জয়ন্ত দাস নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করল হাবরা থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে নিজের বাড়িতে ঠাঁই করে দেওয়ার জন্য পরিবারের উপরে চাপ সৃষ্টি করতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে জয়ন্ত।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে নিজের পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করেছিল জয়ন্ত। কিন্তু হাবরা থানার মছলন্দপুরের নতুনপল্লির বাসিন্দা জয়ন্তের বাড়ির লোক এই বিয়ে মেনে নেয়নি। এখন তাদের একটি কন্যাসন্তান আছে। স্ত্রী ও মেয়েকে তার বাড়ি যাতে মেনে নেয়, তাই ছ’বছরের ভাইপোকে অপহরণ করে নিজের কাছে আটকে রেখেছিল সে। মুক্তিপণ নয়, দাবি ছিল এক ঘণ্টার মধ্যে তার দু’বছরের মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে আসতে হবে বাড়িতে। তা না হলে ভাইপোকে সে মেরে ফেলবে।

জয়ন্ত রঙের কারখানায় কাজ করে। মঙ্গলবার সকালে তার ভাইপো আদিত্য গিয়েছিল স্থানীয় বিআর অম্বেদকর এস এস নিকেতন স্কুলে। বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ সে স্কুলে হাজির হয়। বলে, বাড়িতে লোকজন এসেছে। আদিত্যকে দেখতে চাইছে সকলে। তাকে যেন স্কুল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমটায় আপত্তি করলেও কাকার হাতে ছেলেটিকে ছাড়তে শেষমেশ রাজি হয়ে যায়। ভাইপোকে সঙ্গে নিয়ে আর বাড়ি যায়নি জয়ন্ত। গাইঘাটা, বনগাঁ এলাকায় ঘোরাফেরা করে। সেখান থেকেই বাড়িতে ফোন করে জানায়, সে আদিত্যকে অপহরণ করেছে। এক ঘণ্টার মধ্যে গোপালনগরের শ্বশুরবাড়ি থেকে তার মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে আসতে হবে। তা না হলে আদিত্যকে মেরে ফেলবে।

Advertisement

গোটা বিষয়টি আদিত্যের মা রূপালিদেবী হাবরা থানায় জানান। পুলিশ ওই যুবকের বাবা ও মাকে নিয়ে গোপালনগরে আসে। তাঁদেরকে দিয়ে জয়ন্তকে ফোন করায়। ফোনে বলা হয়, তাঁরা জয়ন্তর মেয়ে ও স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছে। সে যেন দ্রুত শ্বশুরবাড়িতে আসে। ফাঁদে পা দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে আসতেই পুলিশ জয়ন্তকে গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে জয়ন্ত শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীর সোনার গয়না নিয়ে পালিয়েছিল। ফলে সেখানেও আর যেতে পারত না ইদানীং।

শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে ওই যুবক। ভাইপোকে মেরে ফেলার কোনও কুমতলব তার ছিল না বলেই পুলিশকে জানায় সে। পুলিশ কর্তাদেরও অনুমান, স্রেফ চাপ সৃষ্টি করতেই খুনের হুমকি দিয়েছিল সে। পুলিশ জানিয়েছে, আদিত্য কাকার সঙ্গে নিশ্চিন্ত মনে ঘুরলেও পরে বাড়ির জন্য কান্নাকাটি শুরু করে।

জয়ন্তের বৌদি রূপালিদেবী বলেন, ‘‘আমাদের বলতে পারত। কিন্তু এই কাজ করা উচিত হয়নি। যদি পুলিশ ছেলে উদ্ধার করে না দিতে পারত, তা হলে কী হত ভেবেই ভয় লাগছে।” তবে জয়ন্তের স্ত্রী রূপসী দাস পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। শ্বশুরবাড়িতে কথা বলে বিষয়টি যাতে মিটিয়ে করা হয়, সেই অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন