তদন্তে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
সিসি টিভির ফুটেজ দেখে বহু ক্ষেত্রেই তদন্তের বড়সড় সূত্র আসে পুলিশের হাতে। অনেক সময়ে অপরাধী ধরাও পড়ে। কিন্তু চুরি-ডাকাতিতে এসে ধড়িবাজ দুষ্কৃতীরা সিসি টিভি, ক্যামেরাই খুলে নিয়ে পালিয়েছে, এমন বড় একটা শোনা যায় না। ফলে বুধবার রাতে শ্যামনগরের কাউগাছি মোড়ে সোনার দোকানে চুরির ঘটনায় আক্কেল গুড়ুম তদন্তকারী অফিসারদেরও। ১৬টি তালা ভেঙে দোকানে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। বহু টাকার জিনিস নিয়ে পালিয়েছে। কিন্তু যাওয়ার আগে নিয়ে গিয়েছে সিসিটিভি, ক্যামেরাও। যা দেখে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলতে বাধ্য হলেন, “অপরাধীরা অতি চালাক। অপরাধের কোনও চিহ্ন রাখবে না বলেই সিসি ক্যামেরা, টিভি নিয়ে পালিয়েছে। তবে তদন্ত চলছে। দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বেই।”
সিসি টিভি যে ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান, দোকান, বাড়িতে অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, সে কথা বারবারই বলছেন পুলিশ কর্তারা। সাধারণ মানুষের সে ব্যাপারে এখনও তেমন সচেতনতা দেখা না গেলেও ব্যবসায়ীরা তুলনায় কিছুটা সচেতন হয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি টিভি বসানোর পক্ষপাতী অনেকেই। যা বহু ক্ষেত্রে চুরি-ডাকাতি ঘটে গেলে তদন্তের মূল হাতিয়ার হয়ে উঠছে পুলিশের কাছেও। এর আগে একাধিক বড় ঘটনায় এ ভাবেই সাফল্য পেয়েছে পুলিশ।
পার্কস্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডে জড়িতদের প্রথমে চিহ্নিত করা না গেলেও পরে হোটেলের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে সেই কাজে সফল হন তদন্তকারী অফিসারেরা।
শর্ট স্ট্রিটে মহিলার গুলি চালনার ঘটনা সিসি টিভি ফুটেজ থেকেই জানতে পেরেছিল পুলিশ।
সিসি টিভির সাফল্য
• পার্কস্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডে জড়িতদের প্রথমে চিহ্নিত করা না গেলেও পরে হোটেলের
সিসি টিভি ফুটেজ দেখে এগোয় তদন্ত এগোয় পুলিশ।
• শর্ট স্ট্রিটে মহিলার গুলি চালনার ঘটনা ফুটেজ থেকেই জানতে পেরেছিল পুলিশ।
• আলিপুর থানায় হামলার ঘটনায় তদন্তে বড় মাধ্যম হয়েছিল সিসি টিভি ফুটেজ।
আলিপুর থানায় হামলার ঘটনায় তদন্তে বড় মাধ্যম হয়েছিল সিসি টিভি ফুটেজ। যদিও তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশের সদিচ্ছা কতটা ছিল, তা নিয়েই সমালোচনার ঝড় ওঠে নানা মহলে। যদিও তত ক্ষণে সংবাদমাধ্যমে সেই ফুটেজের ছবি দেখে তদন্ত এগোতে সুবিধা হয় পুলিশের।
৪) কলকাতার একাধিক গয়নার দোকানে চুরি, কেপমারির ঘটনায় সিসি টিভির ফুটেজ অপরাধীকে ধরতে সাহায্য করেছে। এ ছাড়াও, ইদানীং শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় লাগানো সিসি টিভি থেকে দুর্ঘটনার তদন্তে পুলিশ যথেষ্ট সাহায্য পেয়ে থাকে।
পুলিশের সন্দেহ, শ্যামনগরের কাউগাছি মোড়ের ওই সোনার দোকানে যারা হানা দিয়েছিল, তারা এ সব খবর বিলক্ষণ রাখে। আর রাখে বলেই সিসি টিভি, ক্যামেরাই নিয়ে পালিয়েছে। ১৬টি তালা ভেঙে দোকানে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। রাত ১১টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান মালিক ত্রিনাথ পাল। তারপরেই ওই ঘটনা। সকালে স্থানীয় লোকজন দোকানের তালা ভাঙা দেখে ত্রিনাথবাবুকে খবর দেন। তিনি বলেন, “দোকান থেকে প্রচুর গয়না, নগদ টাকা নিয়ে পালালেও ভল্ট ভাঙতে পারেনি দুষ্কৃতীরা।”