হাড়োয়ার গ্রামে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব

তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধানের (বর্তমানে সাসপেন্ডেড) বিরুদ্ধে মারধর, ভাঙচুর, বোমাবাজি, গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল। হাড়োয়ার কুলটি পঞ্চায়েতের মাখলা গ্রামের এই ঘটনায় এক মহিলা-সহ পাঁচজন জখম হয়েছেন। তাঁদের হাড়োয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরে গ্রামবাসীরা দু’জনকে ধরে ফেলে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। বসিরহাটের এসডিপিও শ্যামল সামন্ত বলেন, ‘‘হামলার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহল শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাড়োয়া শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:৪৬
Share:

তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধানের (বর্তমানে সাসপেন্ডেড) বিরুদ্ধে মারধর, ভাঙচুর, বোমাবাজি, গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল। হাড়োয়ার কুলটি পঞ্চায়েতের মাখলা গ্রামের এই ঘটনায় এক মহিলা-সহ পাঁচজন জখম হয়েছেন। তাঁদের হাড়োয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরে গ্রামবাসীরা দু’জনকে ধরে ফেলে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। বসিরহাটের এসডিপিও শ্যামল সামন্ত বলেন, ‘‘হামলার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহল শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

হাড়োয়া ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল জানান, কুলটি পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন দলের আবদুল রউফ মোল্লা। দুর্নীতি এবং খুনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ায় গ্রাম ছেড়ে পালালে দল তাঁকে সাসপেন্ড করে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে প্রতিশোধ নিতেই তিনি বহিরাগত দুষ্কৃতীদের নিয়ে গ্রামে ঢুকে হামলা চালিয়েছেন। মহিলাদের শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে হাড়োয়ার কুলটি পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের সব ক’টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। প্রধান হন রউফ। গত কয়েক মাস আগে গ্রামের তৃণমূল কর্মী আরেফ মোল্লা নিখোঁজ হওয়ায় তারঁ পরিবারের পক্ষ থেকে রউফ-সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ করে খুনের অভিযোগ করা হয়। তৃণমূল সদস্যদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠছিল, দলের নীতি না মেনে দুর্নীতিমূলক কাজ করছেন রউফ।

Advertisement

পঞ্চায়েত সদস্যেরা একযোগে এ সবের বিরোধিতা করেন। এ সবের জেরে দল থেকে সাসপেন্ড হন রউফ। কুলটি পঞ্চায়েত প্রধান হন সাহাউদ্দিন বৈদ্য।

কী হয়েছিল শনিবার?

পুলিশ জানিয়েছে, রাত ২টা নাগাদ কিছু দুষ্কৃতী গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। গ্রামের মানুষ প্রথমে ভেবেছিলেন, ডাকাত পড়েছে। কিন্তু দুষ্কৃতীরা যখন রউফকে কেন গ্রামছাড়া করা হয়েছে বলে চিৎকার জোড়ে, তখন জানাজানি হয় কার মদতে এমন কাণ্ড ঘটেছে। তবে গ্রামবাসীরা সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার আগেই ততক্ষণে ‘অ্যাকশনে’ নেমে পড়েছে দুষ্কৃতীরা। শুরু হয় লুঠপাট। বাজতুল্লা মোল্লার বাড়িতে বোমা ছোড়া হলে সেখানে আগুন ধরে যায়।

ইতিমধ্যে গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে তাড়া করলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে দুষ্কৃতীরা পালায়। সে সময়ে বিদ্যাধরী নদী সাঁতরে পালাতে গিয়ে দুই দুষ্কৃতী ধরা পড়ে যায়। তাদের একজনের বাড়ি ডায়মন্ড হারবার, অন্যজনের মাখলা গ্রামেই।

দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমা এবং গুলিতে জখম মাসুরা বিবি, সহিদুল মোল্লা, আলাউদ্দিন মোল্লা, বাজতুল্লা মোল্লা এবং আমাউদ্দিন মোল্লাকে হাড়োয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাসুরা বলেন, ‘‘মহিলাদের ঘর থেকে টেনে বের করে মারধর, শ্লীলতাহানি করেছে ওরা।’’ বাজতুল্লা, সহিদুলরা বলেন, ‘‘রউফ দুষ্কৃতীদের নিয়ে হামলা চালিয়েছে। মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা গয়নাও লুঠ করেছে। মারধর করেছে।’’

রউফ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘উদ্দেশ্যপ্রনোদিত’ বলে দাবি করে বলেন, ‘‘অন্যায় ভাবে প্রধানের পদ থেকে সরিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, এখন আবার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা হামলার অভিযোগ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন