শিলিগুড়ি থেকে মিরিক যাওয়ার পথে রক্তিখোলার উপর ভেঙে পড়া সেতু। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
রাতভোর প্রবল বৃষ্টিতে দার্জিলিঙের প্রায় ১২ জায়গায় ধস নামে। তার জেরে প্রাণ হারালেন ২৮ জন। নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে প্রচুর ঘরবাড়ি। মুখ্যমন্ত্রীর অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, মৃত ২৮ জনের মধ্যে ২৭ জনের ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে। এক জনের দেহ ময়নাতদন্ত হওয়া বাকি আছে।
দুর্যোগের এই খবরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে দুর্গতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। পাহাড়ের এমন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নির্ধারিত জেলা সফর কাটছাঁট করে বুধবারই উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। কোচবিহারে থাকা স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে সকালেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছন। অন্য দিকে, গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজু দার্জিলিং আসছেন বলে মোদী টুইট করে জানিয়েছেন।
এ দিনের ধসের ফলে দার্জিলিং জেলার মিরিকের সৌরেনিতে পাঁচটি বাড়ি ভেঙে পড়ে। মিরিকে ১৩ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লিম্বুঝোরাতেই পাঁচটি দেহ উদ্ধার করা হয়। কালিম্পঙের ৮ এবং ১৮ মাইলে দু’টি বাড়ি ভেঙে পড়ে মারা যান পাঁচ জন। একটি বাড়ি রাস্তার উপর মুখ থুবড়ে পড়ে। সুখিয়াপোখরিতে বাড়ি চাপা পড়ে এক জন মারা গিয়েছেন। কার্শিয়াঙে ধসের কবলে একটি সেতু পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ প্রবল বর্ষণ শুরু হয় পাহাড় এবং সংলগ্ন সমতল জুড়ে। সেই বৃষ্টি চলে প্রায় গোটা রাত। কালিম্পং, কার্শিয়াঙের বিস্তীর্ণ এলাকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তিস্তার জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। বিভিন্ন জায়গায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ধসের কারণে শিলিগুড়ি-সিকিম সড়কপথ বন্ধ। সমতল থেকে পাহাড়ে ওঠার প্রায় সব রাস্তাই আটকে গিয়েছে। সীমান্ত সড়ক সংস্থা (বিআরও)কে উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে।
জেলাসফরে মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার রাতেই নদিয়া হয়ে মুর্শিদাবাদ পৌঁছেছিলেন। জেলা সফর কাটছাঁট করে এ দিন সন্ধ্যায় তিনি উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। রাতেই তিনি শিলিগুড়ি পৌঁছবেন। সুকনায় রাত কাটিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার সকালেই মিরিক যাবেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।