এগিয়ে গিয়েও পিছোলেন বিমল গুরুঙ্গ। আজ, শুক্রবার, তাঁর দলের তিন বিধায়কের ইস্তফা দেওয়ার কথা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা আগেই ঘোষণা করে থাকলেও, শেষ অবধি এ দিন ইস্তফা দিচ্ছেন না তাঁরা। যা ছিল রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল, তা মোর্চাকেই চাপে ফেলেছে, মানছেন মোর্চা নেতারাও।
মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা কার্শিয়াঙের বিধায়ক রোহিত শর্মা জানান, শুক্রবার শোকসভা হয়েই বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত হয়ে যাবে। তাই তাঁরা এদিন ইস্তফা দেবেন না। ‘‘আলোচনা করে সোমবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ভাবছি আমরা,’’ বলেন তিনি। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি অবশ্য এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিকে, দলে ভাঙনের আশঙ্কা করছেন গুরুঙ্গ। কালিম্পঙের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী যে ইস্তফায় আগ্রহী নন, সে কথা দলের কয়েক জনকে জানিয়েছেন। হরকা একা নন। চার বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরে কেন পাহাড়ের তিন বিধায়ক ইস্তফা দেবেন, তা নিয়ে মোর্চার অন্দরে প্রশ্ন। অন্দরের খবর, বিধানসভায় এলাকার সমস্যা তুলে ধরার, সমাধানের রাস্তা খোঁজার চেষ্টা কেন বন্ধ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাঁদের যুক্তি, তা হলে আগে জিটিএ প্রত্যাখ্যান করা দরকার। কট্টরপন্থীরা কিন্তু মনে করছেন, সোমবারই ইস্তফা দিয়ে রাজ্যের উপরে চাপ বাড়ানো জরুরি।
জিটিএ চালাতে বাধা দিচ্ছে রাজ্য, এই অভিযোগে বিধায়কদের ইস্তফার ঘোষণা করেন গুরুঙ্গ। ১১ সেপ্টেম্বর এই ঘোষণার সপ্তাহখানেকের মাথায় তিনি ইস্তফার দিনও নির্দিষ্ট করেন — ১৮ সেপ্টেম্বর। ঘটনাচক্রে, ওই সময়ে কালিম্পঙে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে হরকাবাহাদুর দেখাও করেন। তারপরেই হরকা আক্ষেপ করেন, ইস্তফার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাঁকে জানানো হয়নি। এমনকী, আগামী দিনে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন বলেও জানিয়ে দেন তিনি। কালিম্পঙের মোর্চা নেতা-কর্মীদের একাংশও হুঁশিয়ারি দেন, হরকা রাজনীতি ছাড়লে তাঁরাও দল ছেড়ে দেবেন। এর পরেই গুরুঙ্গ প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আপাতত ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দেন।