প্রধানমন্ত্রীর নোট বাতিলের ঘোষণার পরেই জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে জমা পড়া টাকা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছিল ইডি। এ বার প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতিগুলির দিকেও নজর দিল তারা।
নোট বাতিল ঘোষণার পর প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতিগুলিতে পুরনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোটে লক্ষ লক্ষ টাকা জমা পড়তে শুরু করেছিল। কারা ওই টাকা জমা দিয়েছেন, তা জানতে এ বার সমিতিগুলিকে তলব করতে শুরু করল ইডি ।
মঙ্গলবার হাওড়া জেলার চারটি প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতির কর্তাদের ডেকে পাঠান ইডি-র তদন্তকারীরা। ওই সমিতিগুলি হল, দক্ষিণ ভাটোরা প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতি (জয়পুর), জগৎবল্লভপুর প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতি (জগৎবল্লভপুর), দেওড়া প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতি (আমতা) এবং বাণীবন-জগদীশপুর প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতি (উলুবেড়িয়া)। দক্ষিণ ভাটোরা বাদে বাকি তিনটি সমিতির কর্তারা ইডি-র দফতরে হাজির হন। তাঁদের দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি-র আধিকারিকেরা। ইডি-র তরফে জানানো হয়েছে, নাম ও ফোন নম্বর পাওয়া গেলে তাঁরা ওই গ্রাহকদের আয়ের উৎস নিয়ে তদন্ত করবেন।
ইডি সূত্রের খবর, নোট বাতিল কাণ্ডে দক্ষিণ ভাটোরা কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে পুরনো নোটে জমা পড়েছে মোট ৯৩ লক্ষ টাকা। একটি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে ওই সমিতি জমা দিয়েছে ৩৯ লক্ষ টাকা। বাণীবন-জগদীশপুর কৃষি উন্নয়ন সমিতি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে ৭৭ লক্ষ ৮৮ হাজার এবং একটি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে ৪৪ লক্ষ টাকা জমা করেছে। জগৎবল্লভপুর সমিতি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে জমা করেছে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে তারা জমা রেখেছে ৪৭ লক্ষ টাকা। দেওড়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে রেখেছে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে তারা রেখেছে ১৩ লক্ষ টাকা।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধিকর্তারা বার বারই বলেছেন, প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে রেখে পুরনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট সাদা করে নেওয়া হয়েছে অনেক জায়গাতেই। কারণ, সমিতিতে জমা পড়া টাকা জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক বা বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে জমা করে তার বদলে নতুন নোট নিতে পারে সমিতিগুলি। এ ভাবে যাতে কালো টাকা সাদা না করা হয়, সেজন্য বাতিল নোট জমা নিতে সমবায় ব্যাঙ্ক ও প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতিগুলিকে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিষেধাজ্ঞা মানা হয়নি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এ বার তাই গ্রাহক ধরে ধরে তাঁদের আয়ের উৎস খুঁজে বের করতে চাইছে ইডি।