৬০ আসনেই ঘুরবে ভাগ্য, তৃণমূলকে হিসেব প্রশান্ত কিশোরের

দলের তথ্য পেশ করে বিধায়কদের কাছে প্রশান্ত জানতে চেয়েছিলেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেতা আসনগুলিতে লোকসভা ভোটে ধস হয়েছে কেন। শুধু আসন কমেছে, তা-ই নয়।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০২
Share:

ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর।

রাজ্য বিধানসভার সংরক্ষিত আসনের মধ্যে কম-বেশি ৬০টির উপরেই ঝুলে আছে তৃণমূলের ভাগ্য।

Advertisement

লোকসভা ভোটের ফলের ভিত্তিতে ২৯৪ আসনের বিধানসভায় সমীক্ষা চালিয়ে তৃণমূলকে এই মত জানিয়েছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। গত লোকসভা নির্বাচনে হাতছাড়া তফসিলি জাতি ও জনজাতি ভোট ফেরাতে পারলে ২০২১ সালে তৃণমূলের ২০০ আসন নিশ্চিত হতে পারে বলে দলীয় নেতৃত্বকে ‘আশ্বস্ত’ করেছেন তিনি। তফসিলি সংরক্ষিত আসনের দলীয় বিধায়ক, জেলা পরিষদ সভাধিপতি ও সাংগঠনিক সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রশান্ত।

দলের তথ্য পেশ করে বিধায়কদের কাছে প্রশান্ত জানতে চেয়েছিলেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেতা আসনগুলিতে লোকসভা ভোটে ধস হয়েছে কেন। শুধু আসন কমেছে, তা-ই নয়। গোটা রাজ্যে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের ভোটের হিসেব ধরলে বিজেপি তৃণমূলের চেয়ে প্রায় ৮% বেশি পেয়েছে। ফলাফলে স্পষ্ট, বিজেপি যে সব আসন জিতেছে, তার বেশির ভাগ তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। বিধানসভা ভোটের হিসেবে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত ৮৪ টি আসনের ৫৮টি তৃণমূলের দখলে। টিম পি কে-র মতে, এই আসন ধরে রাখতে পারলে অসংরক্ষিত আসনেও তফসিলি জাতি ও জনজাতি ভোট ফেরানো যাবে। তাতে মমতা সরকারের ‘হ্যাট্রিক’ও সম্ভব।

Advertisement

২০১৬ সালের হিসেব ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বদলে গেল কী ভাবে? বৈঠকে সংরক্ষিত আসনের বিধায়কদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই অংশের দলীয় জনপ্রতিনিধিদের জনবিচ্ছিন্নতা উদ্বেগের কারণ। মমতার মতে, তফসিলি জাতি ও জনজাতি বিধায়কেরা এই অংশ থেকে উঠে এলেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। ফলে, জনজাতি মানুষও এই জনপ্রতিনিধিদের আর নিজেদের লোক মনে করছেন না। লোকসভা ভোটে তার প্রভাব পড়েছে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন মমতা।

তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনের বেশ কিছু পুরোপুরি মতুয়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত। রাজ্যের মতুয়া-প্রধান আসনগুলিতে বিজেপি জিতেছে। যে সব জায়গায় বিজেপি আসন জিততে পারেনি, সেখানেও মতুয়া ভোট তারাই পেয়েছে বলে সমীক্ষায় দেখেছে তৃণমূল। সামগ্রিক ভাবে তার জন্য তৃণমূলের ‘জনবিচ্ছিন্নতা’কেই চিহ্নিত করেছে তাঁর সমীক্ষক দল। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট মত জানিয়েছেন নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার সংরক্ষিত আসনের দুই বিধায়ক।

মুখ্যমন্ত্রী মমতার উপস্থিতিতেই সংরক্ষিত আসনের তৃণমূল বিধায়কদের অনেকে বৈঠকে দাবি করেছেন, তফসিলি অধ্যুষিত অঞ্চলে গৃহ প্রকল্পের সুবিধা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে বার্ধক্যভাতা প্রাপকের সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন কেউ কেউ। দু-এক জনের মত, পিছিয়ে থাকা এই অংশের গরিব মানুষকে আরও বিশেষ কিছু সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসা, শিক্ষার ক্ষেত্রে কলকাতার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমেই এই কাজ করার কথা বলেছেন সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত সদ্যপ্রাক্তন এক দলীয় মন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন