তদন্তের মুখে রাজ্যের আরও ৬৬টি সংস্থা

সারদা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের আরও ৬৬টি সংস্থার বিরুদ্ধে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের তদন্ত চলছে বলে আজ রাজ্যসভায় জানান অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সাধারণ মানুষের থেকে বেআইনি ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে প্রতিশ্রুতি মতো তা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। সারদা কাণ্ডে তদন্ত করেছে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা এসএফআইও। তার রিপোর্ট এখন সিবিআইয়ের হাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩১
Share:

সারদা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের আরও ৬৬টি সংস্থার বিরুদ্ধে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের তদন্ত চলছে বলে আজ রাজ্যসভায় জানান অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সাধারণ মানুষের থেকে বেআইনি ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে প্রতিশ্রুতি মতো তা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। সারদা কাণ্ডে তদন্ত করেছে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা এসএফআইও। তার রিপোর্ট এখন সিবিআইয়ের হাতে।

Advertisement

এ-পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের আট সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি। এমনকী আজও তারা কলকাতার দু’টি সংস্থার টাকা তোলার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে। এদের মধ্যে ভারতীয় রিয়েল এস্টেট নামে একটি সংস্থা ২৯৪ জন লগ্নিকারীর থেকে ৯৯ লক্ষ টাকা তুলেছে বলে অভিযোগ। স্বর্ণভূমি নামে অন্য সংস্থাটি ৩৪০ জনের থেকে তুলেছিল ৪৬ লক্ষ।

গত সপ্তাহেই অর্থ মন্ত্রক জানায়, পশ্চিমবঙ্গে ২০০টি অবৈধ লগ্নি সংস্থা আছে এবং দেশের মধ্যে কলকাতাতেই এমন সংস্থার সংখ্যা সব থেকে বেশি। জেটলির বক্তব্য, এই ২০০টি সংস্থা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে নাম নথিভুক্ত না করেই অর্থ সংগ্রহ করছিল। ২০১১ থেকে গত ২০ নভেম্বর পর্যন্ত এই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সে সব অভিযোগ তদন্ত সংস্থার পাঠিয়েছে। অভিযোগ পাঠানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং সেবি-র কাছেও। এদের মধ্যেই ৬৬টি-র বিরুদ্ধে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক নিজেই কোম্পানি আইনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

সিপিএমের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থ মন্ত্রকের কাছে প্রশ্ন তুলেছিলেন, এ-পর্যন্ত বেআইনি লগ্নি সংস্থাগুলি পশ্চিমবঙ্গ থেকে কত টাকা সংগ্রহ করেছে? অর্থ মন্ত্রক সরাসরি কোনও উত্তর দেয়নি। তবে জেটলি জানান, রোজভ্যালি ১৫ হাজার কোটি টাকা তুলেছিল। তাদের বিরুদ্ধে নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। রোজভ্যালির ২৯৫ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ আছে।

অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, সারদার মতো অধিকাংশ সংস্থা আসলে ‘পন্জি স্কিম’ চালাচ্ছিল। যেখানে প্রথমে কিছু মানুষের থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। তার পর অন্য লগ্নিকারীদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়। পন্জি প্রকল্পের কোনও আইনি সংজ্ঞা নেই। অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হা আজ সংসদে জানান, সাধারণ ভাবে অবৈধ লগ্নি সংস্থাকেই ‘চিট ফান্ড’ বলা হয়। কিন্তু চিট ফান্ড আইন অনুযায়ী নথিভুক্ত সংস্থা নিজের ব্যবসা চালাতে পারে। নথিভুক্ত চিট ফান্ড সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে এ-পর্যন্ত কোনও অভিযোগ নেই। তাই যাবতীয় চিট ফান্ড বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব নিয়েও কেন্দ্র ভাবনাচিন্তা করছে না। তবে সারদা কেলেঙ্কারির পরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন করার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। চলছে প্রচার কর্মসূচি। বাজার থেকে কারা বেআইনি ভাবে টাকা তুলছে, তার উপর নজরদারি ব্যবস্থাও আরও মজবুত করা হয়েছে। আর সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন