উপস্থিত: ডিএম অফিসে হাজিরা খাতায় সই। ছবি:বিশ্বরূপ বসাক।
সোমবারের সকালটায় পাহাড়ের সরকারি অফিসগুলি অন্য দিনের মতো ছিল না। ভোর থেকে টানা বৃষ্টি। ঠান্ডা। তার মধ্যে রেনকোট পরে তড়িঘড়ি অফিসে পৌঁছতে সরকারি কর্মীদের ছোটাছুটি। জিটিএ-র সদর দফতর লালকুঠিতেও ৯০ শতাংশ হাজিরা। তবে মোর্চার দখলে থাকা দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং পুরসভায় উপস্থিতির হার ছিল কম। দার্জিলিং পুরসভা বন্ধ ছিল।
অন্য দফতরগুলিতে বেলা ১০টার মধ্যে পৌঁছেই হাজিরা খাতার সই করার জন্য হুড়মুড়িয়ে পড়লেন অনেকে। একই ছবি কার্শিয়াং, মিরিক বা কালিম্পঙেও। রবিবার ছুটির দিনই পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল, বন্ধে অফিস না গেলে কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে রাজ্য। সার্ভিস বুকে দাগ পড়ার আশঙ্কাও ছিল। তাই হাজিরা ৯০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘হাজিরার হার ভাল ছিল। কিছু কর্মী কোথায়, কেন আসেননি, তা দেখা হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে সরকারি নিয়ম মেনে ব্যবস্থা হবে।’’
পাহাড়ে হাজিরা
দফতর ভিত্তিক
• জেলাশাসকের দফতর ৯৫%
• সদর মহকুমা শাসক ১০০%
• ভূমি রাজস্ব ৯৮%
• পূর্ত ৯২%
• বিদ্যুৎ বণ্টন ৯৪%
• মিরিক মহকুমা শাসক ১০০%
• সুখিয়াপোখরি বিডিও ৯৬%
• রংলি রংলিয়ট বিডিও ৯৭%
• দার্জিলিং পুলবাজার বিডিও ১০০%
• জিটিএ-র লালকুঠি দফতর ৯০%
• গ্রুপ এ অফিসার ১০০%
• গ্রুপ সি অফিসার ৯১%
• গ্রুপ ডি ৯৩%
তবে সরকারি কর্মীদের বেশির ভাগই মোর্চার সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। চাকরি বাঁচাতে কাজে এলেও তাঁদের অফিস ফেরতা মোর্চার অফিসেও হাজিরা দিতে দেখা যায়। জেলাশাসক অফিসের ক’জন কর্মী মোর্চা দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে জানান, চাকরির তাগিদেই যে অফিসে যেতে হয়েছে, সেটাই দলকে জানাতে এসেছেন। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘সরকার পুলিশ দিয়ে, ভয় দেখিয়ে অফিস খোলা রাখল।’’
আরও পড়ুন:ভাঙড়ে কথা চান মমতা
অবশ্য গায়ের জোরে বন্ধ করার ব্যাপারে মোর্চার কর্মীদের একাংশও যে শঙ্কিত ছিলেন, তা-ও একান্তে মানছেন অনেকেই। কারণ, এত দিন বন্ধের সময়ে সরকারি অফিসে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ঢুকে গ্রেফতার হলে হলফনামা দিয়ে এবং ব্যক্তিগত ৫০০ টাকা বন্ডে ছাড়া মিলত। এ বার থেকে জামিন পেতে দু’জন সরকারি কর্মীর শংসাপত্র ও ২০ হাজার টাকার বন্ড লাগছে। জয়েন্ট বিডিও স্তরের আধিকারিকদেরও ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যাতে সহজেই লাঠি চালানোর মতো সিদ্ধান্ত তাঁরা নিতে পারেন। এ দিন দার্জিলিং পুরসভা বন্ধ থাকায় সরকারি অডিট দল পুরসভায় ঢুকতে পারেনি। পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হবে। মিরিকে তৃণমূলের চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই কাজে যোগ দেন। জিটিএ সদর দফতরেও বিশেষ অডিট দল কাজ করেছে।