ফের নদীতে ঝাঁপ, বাঁচালেন ২ মাঝি

পরিবার সূত্রে জানা যায়, কল্পনাদেবীর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। জজ কোর্ট মোড়ে তিন ছেলে মুদির দোকান চালান। তাঁর স্বামী শম্ভুনাথবাবুর দাবি, ছেলেরা তাঁদের যথেষ্ট দেখাশোনা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১১
Share:

ত্রাতা: যাত্রীকে বাঁচালেন গৌরাঙ্গ রাজোয়ার। কাটোয়ায়। নিজস্ব চিত্র

ব্যবধান দু’টো দিনের। কাটোয়ায় ফের নৌকা থেকে ভাগীরথীতে ঝাঁপ দিলেন যাত্রী। আবারও বাঁচালেন মাঝিরা। বুধবার এক বধূ ও তাঁর ৯ মাসের মেয়েকে বাঁচিয়েছিলেন দুই যুবক। শনিবার এক বৃদ্ধাকে জল থেকে তুলে আনলেন প্রৌঢ় মাঝি ও তাঁর সহকারী।

Advertisement

এ দিন সকালে কাটোয়া থেকে নদিয়ার বল্লভপুরগামী নৌকায় চড়েছিলেন মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের বাসিন্দা কল্পনা ঘোষ। মাঝ নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। সঙ্গে-সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন মাঝি গৌরাঙ্গ রাজোয়ার। লাইফ সেভিং টিউব নিয়ে নামেন তাঁর সঙ্গী পল্টু হালদারও। দু’জনে মিলে কল্পনাদেবীকে টেনে তুলে আনেন।

বছর আটান্নর গৌরাঙ্গবাবু এর আগেও দু’বার নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবন্ত যাত্রীদের তুলে এনেছেন। বছর পাঁচেক আগে সন্তান-সহ বধূকে বাঁচানোর জন্য রাজ্য সরকারের পুরস্কারও পান। গত বছর এক মহিলাকে ভাগীরথী থেকে উদ্ধার করেন তিনি। বারবার মাঝিদের এমন তৎপরতার প্রশংসা করে মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পাল বলেন, ‘‘বিনা প্রশিক্ষণে শুধু সাঁতার জানার উপরে ভরসা করে মাঝিদের এমন কাজকে কুর্নিস জানাই।’’

Advertisement

বহরমপুরের জজ কোর্ট মোড়ের বাসিন্দা কল্পনাদেবী জানান, শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরোন। বহরমপুর থেকে সালার, নবদ্বীপ, ব্যান্ডেল ঘুরে এ দিন সকালে কাটোয়ায় পৌঁছন। তার পরেই নৌকায় উঠে ভাগীরথীতে ঝাঁপ দেন। কেন এমন করলেন, সে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘নানা অসুখে ভুগছি। চিকিৎসার অনেক খরচ। বাড়ির লোকেরা ঠিকমতো দেখাশোনা করে না। এই জীবন রেখে কী লাভ!’’

পরিবার সূত্রে জানা যায়, কল্পনাদেবীর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। জজ কোর্ট মোড়ে তিন ছেলে মুদির দোকান চালান। তাঁর স্বামী শম্ভুনাথবাবুর দাবি, ছেলেরা তাঁদের যথেষ্ট দেখাশোনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে কোনও গণ্ডগোল হয়নি। এক ছেলের সঙ্গে সামান্য মন কষাকষি হয়েছিল কল্পনার। তার পরে মন্দিরে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে যায়।’’ এ দিন সকালে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ঘটনার কথা জানতে পারেন তাঁরা।

কল্পনাদেবীকে এ দিন কাটোয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুরে ছোট ছেলে ছোটন ঘোষ এসে তাঁকে নিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘‘সারা রাত মাকে খুঁজেছি। সকালে এক আত্মীয়ের মারফত খবর পাই।’’ শম্ভুনাথবাবু বলেন, ‘‘যাঁরা আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করেছেন তাঁদের অসংখ্য ধন্যবাদ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন