অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরুর চার দিন আগে কয়েক হাজার নেতাকে নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআরের কাজ ২০ দিন হয়ে যাওয়ার পর পর্যালোচনা বৈঠকে বসছেন অভিষেক। সোমবার বিকাল ৪টের সময়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করবেন তিনি। যে বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা ১০ হাজারের বেশি তৃণমূল নেতানেত্রীর।
তৃণমূল সূত্রের খবর, পরামর্শদাতা সংস্থার রিপোর্ট এবং সাংগঠনিক রিপোর্ট খতিয়ে দেখে একটি ছবি অভিষেকের সামনে পরিষ্কার। তা হল, এই ২০ দিনে অধিকাংশ জেলায় যেমন ভাল ভাবে কাজ হয়েছে, তেমনই আবার কয়েকটি জেলায় নেতৃত্বের মধ্যে গা-ছাড়া মনোভাব দেখা গিয়েছে। কিছু জেলার নির্দিষ্ট কিছু ব্লকে দলের কাজ নিয়ে অভিষেক সন্তুষ্ট নন। সেই সমস্ত জেলা ও ব্লক নেতৃত্বকে অভিষেক কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে দ্বিধা করবেন না বলে খবর তৃণমূল সূত্রে।
গত ৪ নভেম্বর থেকে বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘এনুমারেশন ফর্ম’ বিলি করা শুরু করেছিলেন। তার আগে ৩১ অক্টোবর বৈঠক করে অভিষেক নির্দেশ দিয়েছিলেন, দলের বিএলএ-দের সারা ক্ষণ বিএলও-দের সঙ্গে লেগে থাকতে হবে। সংগঠন দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে ঘেরার বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। প্রথম ধাপের কাজ শেষ হওয়ার পরে দ্বিতীয় ধাপে কী ভাবে কাজ করতে হবে, সোমবারের বৈঠক থেকে সে প্রসঙ্গেও নির্দিষ্ট নির্দেশিকা দেবেন অভিষেক। তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের অনেকের বক্তব্য, বৈধ ভোটারের নাম বাদ পড়লে দ্বিতীয় পর্বের মূল কাজ হবে তাঁদের নাম তালিকায় যুক্ত করা। সে জন্য নথির প্রয়োজন হবে। তা প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে এসআইআরের জন্য তৈরি হওয়া ‘ওয়াররুম’গুলি ব্যবহার করতে চান অভিষেক।
মতুয়া অধ্যুষিত রানাঘাট এবং বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভাগুলিতে দলের করণীয় কী, সে ব্যাপারেও নির্দিষ্ট নির্দেশিকা দিতে পারেন অভিষেক। পাশাপাশি, বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও। তৃণমূলের একটি অংশের আশঙ্কা, রাজ্যের ১১০-১১৫টি বিধানসভা ‘টার্গেট’ করে এসআইআর প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। তা রুখতে না-পারলে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হতে পারে। যদিও বিজেপির বক্তব্য, এ সবই তৃণমূলের মনগড়া অভিযোগ। এসআইআর নির্বাচন কমিশনের কাজ। সেখানে বিজেপির কোনও ভূমিকা নেই। অক্টোবরের শেষে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেকের নির্দেশ ছিল, সাংসদ-বিধায়কদের একটা মাস মাঠে পড়ে থেকে কাজ করতে হবে। গত ২০ দিন কে কেমন কাজ করলেন, তার রিপোর্ট ইতিমধ্যেই অভিষেকের হাতে রয়েছে। তার ভিত্তিতেই সাংসদ-বিধায়কদের মূল্যায়ন হতে পারে সোমবারের বৈঠকে। যদিও অভিষেক-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত এসআইআর প্রক্রিয়ায় দল যে ভাবে নেমেছে, নিচুতলায় সংগঠনের নড়াচড়া যে ভাবে হয়েছে, তাতে মোটের উপর ‘সন্তুষ্ট’ অভিষেক।