আবু আয়েশ মণ্ডল
রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান মনোনীত হলেন বর্ধমানের ‘বিতর্কিত’ নেতা আবু আয়েশ মণ্ডল। কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান ইন্তাজ আলি শাহের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৫ জুলাই। রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের সচিব সুরেশ কুমার বলেন, ‘‘২৫ জুলাই সংখ্যালঘু কমিশনের নয়া চেয়ারম্যান পদে আবু আয়েশ মণ্ডল যোগ দেবেন।’’
বছর তিনেক আগে ডানকুনি টোল প্লাজার কর্মীদের উপরে চড়়াও হয়ে ‘জুতোপেটা’ করার অভিযোগ ওঠে আবু আয়েশ মণ্ডলের বিরুদ্ধে। শেষ অবধি টোল না দিয়েই বর্ধমান চলে গিয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর ডানকুনি টোলপ্লাজার কর্মীরা আবু আয়েশের বিরুদ্ধে ডানকুনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। তার জেরেই সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যেতে হয় ওই তৃণমূল নেতাকে। যদিও টোলপ্লাজার ঘটনা নিয়ে আবু আয়েশের নিজের বক্তব্য, ‘‘টোলপ্লাজার কর্মীদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছিল ঠিকই কিন্তু তাঁদের জুতোপেটা করিনি। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যে সম্পূর্ণ মিথ্যা, তা এখন প্রমাণিত।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘টোলপ্লাজার ঘটনার পর আমাকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছিল। তাই স্বেচ্ছায় সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে গিয়েছিলাম।’’
যদিও তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, এমন বিতর্কিত নেতাকে কেন ফের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনীত করা হল? যদিও কোনও নেতাই এ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিকে প্রাক্তন ওই সিপিএম নেতাকে ফের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যানের পদে বসানোয় সরব হয়েছে বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ, তাঁকে ওই পদে বসানো মানে পদকেই অসম্মান করা। এটা একেবারেই অনৈতিক কাজ।’’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘সিপিএম আমলে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে যাঁরা অপসারিত হয়েছিলেন তাঁদের বেশি করে ঠাঁই হচ্ছে তৃণমূল জমানায়।’’ বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘ওই নেতার ঔদ্ধত্য সর্বজনবিদিত। তাঁকে নতুন করে দায়িত্ব দিয়ে সংখ্যালঘু সমাজের কী উন্নতি হবে, তা সংখ্যালঘুরাই বিচার করবেন।’’