নতুন দায়িত্ব: ইংরেজবাজারে শনিবার কংগ্রেসের দলীয় বৈঠকের পথে সামনে আবু হাসেম খান চৌধুরী, পিছনে ইশা খান চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
মালদহে গড় ধরে রাখতে কোতোয়ালি পরিবারের উপরেই আস্থা রাখল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি পদে ফের বসানো হল প্রয়াত গনি খানের ভাই দক্ষিণ মালদহের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীকে (ডালু)। শনিবার দায়িত্ব পেয়েই সংগঠন মজবুত করার জন্য দলীয় বিধায়ক ও নেতাদের বার্তা দেন তিনি। কিন্তু তাঁর এই বার্তা সত্ত্বেও জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দলের নিচুস্তরের ক্ষোভ আটকানো যায়নি। উল্টে সংগঠন দুর্বল হওয়ার জন্য জেলা নেতৃত্বকেই এ দিন তীব্র ভাবে দুষলেন সাধারণ নেতা-কর্মীরা।
এ দিন ইংরেজবাজারের বিনয় সরকার অতিথি আবাসে বৈঠকে বসে নেতৃত্ব। সেখানে মৌসম নুরের দলবদল নিয়ে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন নেতা-কর্মীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, মৌসমের দলবদল নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই জল্পনা তৈরি হলেও জেলা সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সরানো হয়নি। এতে আখেরে দলেরই ক্ষতি হয়েছে বলে তাঁদের বক্তব্য। পাশাপাশি, জেলায় পরিবারতন্ত্রের জন্যই যে দলের সংগঠন দুর্বল হচ্ছে, তা সরাসরি বুঝিয়ে দেন তাঁরা। ডালুর ছেলে ইশা খান চৌধুরীর নাম উত্তর মালদহ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে প্রদেশ কংগ্রেসের ঘোষণা নিয়ে সরব হন তাঁরা। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে ইশার বদলে উঠে আসে বিধায়ক মোস্তাক আলমের নাম। এর পরেই নেতা-কর্মীদের একাংশের হইহট্টগোলে ভেস্তে যায় বৈঠক। মাইক হাতে নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ডালু। তিনি বলেন, “উত্তরে ইশার প্রার্থী হওয়ার কোনও ইচ্ছে নেই। তবে প্রদেশ কংগ্রেস তাঁর নাম ঘোষণা করেছে। গ্রামে গ্রামে দলীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে আমরা উত্তর মালদহের প্রার্থী ঠিক করব। এখন প্রার্থীর থেকে বেশি প্রয়োজন সংগঠনকে মজবুত করা।”
এ দিন জেলা সভাপতি ছাড়াও দুই বিধায়ক মোস্তাক আলম ও ভূপেন্দ্রনাথ হালদারকে কার্যকরী সভাপতি করা হয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই পদের অন্যতম দাবিদার মোস্তাকের অনুগামীরা তাঁর হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বৈঠকে। এক নেতা বলেন, “কোতোয়ালি পরিবারের সদস্য হওয়ায় মৌসমকে উত্তর মালদহের প্রার্থী করা হয়েছিল। সেই মৌসম দলবদল করলেন। এখন আবার ডালুবাবুর ছেলে ইশা খান চৌধুরীকে প্রার্থী করা হবে বলে ঘোষণা করা হচ্ছে। কোতোয়ালি পরিবার থেকে বারবার করে সাংসদ হলে নিচুস্তরের নেতা-কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে।” যদিও প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি মোস্তাক। ডালু লেন, “কংগ্রেসে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য সকলে মিলে জোটবদ্ধ ভাবে লড়াই করা। আর সংগঠনকে মজবুত করা।”