প্রচারের ময়দানে তিনি কই?

তাঁর পুরনো কেন্দ্রে ভোট, অথচ সেই আবু তাহের এ বার উপ-নির্বাচনে প্রায় ব্রাত্য।

Advertisement

প্রাণময় ব্রহ্মচারী

নওদা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০৫:৪০
Share:

প্রচারে সাহিনা মমতাজ। নওদায়। —নিজস্ব চিত্র।

টানা চার বারের বিধায়ক তিনি। ২০০১ সাল থেকে, কংগ্রেস-নওদা এবং আবু তাহের খান— প্রায় সমার্থক হয়ে গিয়েছিলেন। সেই পুরনো দল থেকে সরে দাঁড়ানোর সুবাদেই আগামী ২০ মে নওদায় ফের নির্বাচন। এ বার তিনি তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের লোকসভা প্রার্থী।

Advertisement

তাঁর পুরনো কেন্দ্রে ভোট, অথচ সেই আবু তাহের এ বার উপ-নির্বাচনে প্রায় ব্রাত্য। দলীয় সূত্রে খবর, গত ৩ মে কলকাতায় জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী যে বৈঠক ডেকেছিলেন তাতেও ডাক পাননি তিনি।

দলের অন্দররে খবর, বহরমপুর মহকুমা সভাপতি অরিত মজুমদার এবং লালবাগ মহকুমা সভাপতি রাজীব হোসেনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে প্রচারে ‘সাহায্য’ করার জন্য শুভেন্দু দায়িত্ব দিয়েছেন। দলের নওদা ব্লক সভাপতি ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেনের কাঁধেও চেপেছে ভোট পরিচালনার দায়িত্ব। সেই ‘টিম’ থেকে তাহের বাদ?

Advertisement

আর দিন সাতেক দূরে নির্বাচন, অথচ প্রচারে তেমন দেখা যাচ্ছে না ডাকাবুকো বিদায়ী বিধায়ককে। এ নিয়ে নওদায় তৃণমূলের অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। নওদায় দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মোশারফ হোসেন বলছেন, ‘‘আবু তাহের খানকে ভোটে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি, উনি ওঁর মতো নির্বাচনী প্রচার করবেন।’’

মোশারফের সঙ্গে আবু তাহেরের ‘মধুর’ সম্পর্ক অজানা নয় কারও। সেই সম্পর্কের জেরেই কি প্রচার-তালিকা থেকে আবু তাহের’কে ছেঁটে ফেলা হয়েছে! নওদার এক তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘আসলে, উপ-নির্বাচনে দলের প্রার্থী পছন্দ হয়নি আবু তাহেরের। সেই জন্য প্রচার থেকে সরে থাকছেন। সে ব্যাপারে জেলা নেতৃত্বকে তিনি জানিয়েছেন। কারণ প্রার্থী, সাহিনা মমতাজ হলেন প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক নাসিরুদ্দিন খানের পুত্রবধূ, যে নাসিরুদ্দিন খানকে হারিয়েই ২০০১ সালে আবু তাহের বিধায়ক হয়েছিলেন।’’

তবে দলের অন্দরে আবু তাহের খানকে নিয়ে নানা ‘চর্চা’ ও কানাঘুষো বন্ধ করতে পাল্টা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ নেমে পড়েছেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অরিত মজুমদার। তিনি বলেন, “আবু তাহের সম্পর্কে যা রটানো হচ্ছে তা ঠিক নয়, উনি দলের মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী, তাই ক্লান্ত ছিলেন। সোমবার আমতলার সভায় উনি উপস্থিত থাকছেন।” আবু তাহেরও বলছেন, ‘‘না না ঘরোয়া সভাতে থাকছি তো আমি। এখন রমজান মাসের উপবাস চলছে, তা ছাড়া খুব গরমও পড়েছে, সব মিলিয়ে কিছু সভায় ছিলাম না।’’

কংগ্রেসে থাকাকালীন সব দায়িত্ব একাই কাঁধে নিতে সামাল দিতে যিনি তিনি সরে থাকলে তৃণমূল জিতবে তো?

আবুর কথায় এ বার বুঝি কিঞ্চিৎ অভিমান, ‘‘দলের সবাই তো দায়িত্ব নিয়েছেন, তাই আমাকে বোধহয় আলাদা করে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এর বেশি আর কী বলব!’’

যা শুনে, জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, “বুঝতেই তো পারছেন, ওঁদের (তৃণমূল) কে কখন ঘরে ‘খিল’ দেবেন আর কে ‘গোসা’ ভাঙাবেন সেটা ওদের দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন