Crime

গুনিনের জামিন, ময়না-তদন্তে দুই শিশুর দেহ

এ দিকে, এ দিন গাজলের ঝাড়ফুঁকের ঘটনায় ধৃত গুনিন আব্দুল রফিককে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা 

গাজল শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৬
Share:

গ্রেফতারির পরে আদালতের পথে গুনিন। নিজস্ব চিত্র

মালদহের গাজলে মৃত দুই শিশুর দেহ ময়না-তদন্ত না করেই কবর দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানায়, রবিবার ভোরে কবর থেকে দু’টি মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্তে পাঠানো হল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ওই হাসপাতালে এখনও ভর্তি রয়েছে আরও দুই শিশু কোহিনুর খাতুন ও তার বোন সাবনুর। তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

এ দিকে, এ দিন গাজলের ঝাড়ফুঁকের ঘটনায় ধৃত গুনিন আব্দুল রফিককে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে আদালতে জামিন পান আব্দুল রফিক। একই সঙ্গে ঘটনায় তদন্তকারী পুলিশ অফিসারকে শো-কজ় করে আদালত। ধৃতের আইনজীবী সুদীপ্ত গঙ্গোপাধ্যায় এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘মৃত শিশুদের পরিবারের লোকেরা আমার মক্কেলের নামে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। এমনকী, আমার মক্কেল যে গুনিন হিসেবে শিশুদের কিছু খাইয়েছিলেন তারও প্রমাণ নেই। কিন্তু আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, ভারপ্রাপ্ত সিজেএম রূপেন্দ্রনাথ বসু তাঁর মক্কেলের জামিন মঞ্জুর করেছেন।

সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে। আদালতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেশের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

গত শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশের বাঁশবাগানে খেলা করে ফেরার পরে একই পরিবারের চার শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে গ্রামীণ হাসপাতাল থাকলেও পরিবারের লোকেরা চিকিৎসার জন্য ডেকে আনেন গুনিন। অভিযোগ, গুনিন আব্দুল রফিক ওই শিশুদের ঝাড়ফুঁক করেন। তার পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে ফিরোজ আলি নামে এক শিশুর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অন্য তিন শিশুকে। শনিবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় সফিকুল ইসলামের। মালদহ মেডিক্যালের সুপার অমিতকুমার দাঁ বলেন, ‘‘কোনও খাবার খেয়েই শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল বলে প্রাথমিক অনুমান। কোহিনুর ও সাবনুর এখন ভাল আছে। আগামী দু’-এক দিনের মধ্যেই ওদের ছেড়ে দেওয়া হবে।’’

এ দিন দুপুরে গ্রামে যান বিজ্ঞানমঞ্চের প্রতিনিধিরা। গ্রামবাসী-সহ পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথাও বলেন তাঁরা। ফিরোজের বাবা আব্দুল খাবির বলেন, ‘‘আমাদের ভুলেই ওদের প্রাণ গেল। এমন ভুল আর কখনও কাউকে করতে দেব না। তবে কী ভাবে ওরা মারা গেল তা পুলিশ তদন্ত করে বের করুক।’’

মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন