State News

চাকরি সম্বল করে ঘুরে দাঁড়ানোর যুদ্ধ অ্যাসিড-আক্রান্তের

প্রত্যয়কে সম্বল করেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন অ্যাসিড হামলার শিকার, সুন্দরবনের বছর পঁচিশের পম্পা দাস।

Advertisement

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০২
Share:

জ্বর সারলেই ‘ছপাক’ ছবিটি দেখবেন অ্যাসিড-আক্রান্ত পম্পা।

‘ছপাক’-এর মালতীর মতো তাঁরও মুখ ঝলসে গিয়েছিল অ্যাসিড হামলায়। সুন্দরবন উপকূলের বাসিন্দা মেয়েটি মালতীর মতোই বলছেন, ‘‘মুখ পুড়েছে। কিন্তু প্রত্যয় নয়।’’

Advertisement

প্রত্যয়কে সম্বল করেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন অ্যাসিড হামলার শিকার, সুন্দরবনের বছর পঁচিশের পম্পা দাস। হারউড পয়েন্ট উপকূল অঞ্চলের বাসিন্দা পম্পা আর কিছু দিনের মধ্যেই হতে চলেছেন ‘মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ’। ছ’মাসের প্রশিক্ষণ পর্ব প্রায় শেষ। অস্ত্রোপচারের পরে আস্তে আস্তে মুখ-গলা-হাতের পুড়ে যাওয়া অংশে পড়ছে ত্বকের প্রলেপ। ক্ষত আর একটু মিলিয়ে গেলে শুরু হবে কাজ।

অ্যাসিড-আক্রান্ত লক্ষ্মী আগরওয়ালের লড়াই নিয়ে তৈরি ছবি ‘ছপাক’ শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে। ছবিতে লক্ষ্মীর চরিত্রের নাম মালতী। তবে ‘ছপাক’ এখনও দেখে উঠতে পারেননি পম্পা। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘জ্বর হওয়ায় যেতে পারিনি। একটু সুস্থ হলেই সিমেনাটি দেখব।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: বাজি তৈরির রাসায়নিক বিক্রি করত ধৃত মুন্না

২০১৭ সালের নভেম্বরে পারিবারিক গোলমালের জেরে কাকদ্বীপের শ্বশুরবাড়িতেই তাঁর উপরে অ্যাসিড হামলা হয়েছিল। তার পরে একের পর এক হাসপাতালে ঘুরে ঠাঁই হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালের বার্ন ওয়ার্ডে। সেখানে প্রায় ৫ মাস চিকিৎসার পরে ফিরে গিয়েছিলেন বাপের বাড়ি। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু পম্পার। স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পরে তাঁর কাছে আসে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ হওয়ার প্রশিক্ষণের সুযোগ।

সুযোগ এল কী ভাবে? দিল্লির এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহায়তায় কয়েক দফায় অস্ত্রোপচার হয়। পম্পার কথায়, ‘‘ওখানেই শুনেছিলাম কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী-দিদি এবং তাঁদের সংগঠনের কথা। তিনিই আমাকে জানান, একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা তাদের কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) প্রকল্পে অ্যাসিড হামলার শিকার মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। যোগাযোগ করি।’’

আরও পড়ুন: বাজি তৈরির রাসায়নিক বিক্রি করত ধৃত মুন্না

ওই সংস্থার টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সঞ্জীবন সরকার তাঁর ব্যারাকপুরের বাড়িতেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে পম্পা আমাদের সংস্থাতেই চাকরি পাবেন।’’ সঞ্জীবনবাবু বলেন, ‘‘মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের অনেক ঘোরাঘুরি করতে হয়। রোদে পুড়তে হয়। তেমন কাজ করার মতো শারীরিক সক্ষমতাও অর্জন করতে হবে ওকে। তবে আমরা সব রকমের সাহায্য করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন