আড়াই যুগ পরে পাহাড়ে কলকাতা পুলিশ

লালবাজার সূত্রের খবর, প্রথম দফায় বিভিন্ন পদের ১০০ জন আজ, মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে পৌঁছচ্ছেন। প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকেই দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়াংয়ের বিভিন্ন জায়গায় যাবেন ওই সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যেরা।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার ও গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ০৩:৩৭
Share:

পৃথক রাজ্যের দাবিতে গত শতকের আটের দশকে দার্জিলিঙে গোলমাল শুরু হওয়ার পরে কলকাতা পুলিশের একটি দলকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। ৩০ বছর পরে, সোমবার রাতে আবার পাহাড়ের পথে রওনা দিল লালবাজারের একটি বাহিনী।

Advertisement

পাহাড়ের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেখানে পাঠানো হচ্ছে মহিলা আইপিএস অফিসার অপরাজিতা রাইকেও। তিনি কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের এডিসিপি।

লালবাজার সূত্রের খবর, প্রথম দফায় বিভিন্ন পদের ১০০ জন আজ, মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে পৌঁছচ্ছেন। প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকেই দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়াংয়ের বিভিন্ন জায়গায় যাবেন ওই সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যেরা। তাঁদের নেতৃত্বে থাকছেন কলকাতা পুলিশের একটি ব্যাটেলিয়নের ডেপুটি কমিশনার।

Advertisement

আটের দশকের মাঝামাঝি সুবাস ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে পৃথক রাজ্যের দাবিতে দার্জিলিঙে হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে পাহা়ড়-পরিস্থিতি সামলানোর বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় তৎকালীন আইজি আর কে হান্ডাকে। তখনই কলকাতা পুলিশের বিশেষ একটি বাহিনীকে পাহাড়ে পাঠানো হয়েছিল। দলটি এক মাসেরও বেশি ছিল দার্জিলিঙে। পাহাড় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠায় ফের লালবাজার থেকে সশস্ত্র বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাটেলিয়ন ও থানা থেকে ১০০ জনকে বাছাই করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আছেন কমব্যাট এবং র‌্যাফের জওয়ানেরাও।

সপ্তাহখানেক আগে পাহাড়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুঙ্গের বাড়ি, পার্টি অফিস-সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশি তল্লাশির পর থেকেই পাহাড় অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে। শনিবার মোর্চা-সমর্থকদের মিছিল-মিটিং রুখতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ বাধে পুলিশের সঙ্গে। অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে তিন জন মোর্চা-সমর্থক মারা যান। তার পরেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য পাহাড় বন্‌ধের ডাক দেয় মোর্চা।

নবান্নের খবর, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৩ আইপিএস অফিসারকে পাহাড়ে পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। তাঁরা দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের বিভিন্ন এলাকার দায়িত্বে রয়েছেন। পাহাড়ে ধরপাকড় শুরু হতেই মোর্চার অনেক নেতা গা-ঢাকা দিয়েছেন। ফলে সরকার-বিরোধী আন্দোলনে নারী মুক্তি মোর্চার সদস্যাদের সামনে রেখে নতুন রণকৌশল নিয়েছেন গুরুঙ্গেরা। এই পরিস্থিতিতে অপরাজিতার মতো মহিলা আইপিএস নামিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে চাইছে নবান্ন।

পুলিশকর্তাদের দাবি, সিকিমের প্রথম মহিলা আইপিএস অফিসার অপারাজিতা নিজে পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা। নেপালি ভাষা জানেন। তাই পাহাড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাড়তি সুবিধে পাবেন তিনি। এক অফিসার বলেন, ‘‘আন্দোলনে ভাষার বিষয়টিকে সামনে আনা হচ্ছে। তাই পুলিশের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে বাঙালি অফিসারদের চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে হিন্দিভাষী অফিসারদের।’’ কেন্দ্রের কাছেও দুই কোম্পানি মহিলা আধা-সামরিক বাহিনী চেয়েছে রাজ্য। তার এক কোম্পানি এ রাজ্যে পৌঁছেও গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন