বাতি বন্ধ, বদলি তাই পতাকা

বাতি গেলেও বাহুল্য যাচ্ছে না রাজ্যে। ‘ভিআইপি’ গাড়ি চিহ্নিত করতে রাজ্যে এ বার আসছে পতাকা সংস্কৃতি। যার আওতায় মন্ত্রী ছাড়াও থাকছেন আইএএস, আইপিএস, ডব্লুসবিসিএস স্তরের আমলারা।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৩:৪০
Share:

বাতি গেলেও বাহুল্য যাচ্ছে না রাজ্যে।

Advertisement

‘ভিআইপি’ গাড়ি চিহ্নিত করতে রাজ্যে এ বার আসছে পতাকা সংস্কৃতি। যার আওতায় মন্ত্রী ছাড়াও থাকছেন আইএএস, আইপিএস, ডব্লুসবিসিএস স্তরের আমলারা।

মন্ত্রীদের গাড়িতে না হয় জাতীয় পতাকা থাকবে। কিন্তু আমলাদের গাড়িতে? ঠিক হয়েছে, সেনা বা আইপিএস অফিসারদের যেমন নিজস্ব পতাকা গাড়িতে লাগানো থাকে, আইএএস এবং ডব্লুবিসিএস অফিসারদেরও তেমনই পতাকা লাগানো হবে। বিভিন্ন স্তরের আমলাদের জন্য সেই পতাকার নকশাও তৈরি করা হচ্ছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে শুধু পতাকা নয়, রাখা হবে ব্রোঞ্জ ফলক এবং বিশেষ স্টিকারও।

Advertisement

যার অর্থ, মন্ত্রী-আমলাদের গাড়িতে একের বদলে এ বার তিনের প্রবেশ! পতাকা, ব্রোঞ্জ ফলক এবং বিশেষ স্টিকার। ‘ভিআইপি’ গাড়ি যাতে অন্য গাড়ির মাঝে আলাদা করে চেনা যায়, সে জন্যই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানাচ্ছেন নবান্নের এক কর্তা।

শুক্রবার প্রশাসনিক বৈঠকের শেষে সমস্ত দফতরের সচিবরা নবান্নে মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। আমলাদের বক্তব্য, লালবাতি উঠে গেলেও এমন কিছু ‘চিহ্ন’ দরকার, যা মন্ত্রী-আমলাদের গাড়িগুলিকে আর পাঁচটা গাড়ি থেকে আলাদা করে চিনিয়ে দেবে। তাঁরা মনে করছেন, মন্ত্রী, বিচারপতি, আমলাদের গাড়ি টোলপ্লাজায় আটকালে, দুর্ব্যবহারের শিকার হলে, রাস্তাঘাটে আটকে পড়লে খারাপ দেখায়। সেই কারণেই কিছু ভিআইপি চিহ্ন গাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কিন্তু কেন এই ভিআইপি সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসছেন না আমলারা?

ঘটনা হল, বিশেষ এই ভিআইপি চিহ্ন লাগানোর ব্যাপারে আমলারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিলেও মুখে তাঁরা দায় ঠেলছেন সরকারের ঘাড়ে! আইএএস এবং আইপিএস অফিসার সংগঠনের বক্তব্য, ‘‘আমলারা নিয়মের দাস। সরকার যে নিয়ম করবে, তা মেনে চলবেন তাঁরা। যেমন এখন বাতি ছাড়াই চলছেন। পতাকা দিলে তা লাগিয়েও চলবেন।’’

কিন্তু সিদ্ধান্ত তো নিয়েছেন তাঁরাই। স্বেচ্ছায় ‘ভিআইপি’ চিহ্নও ছেড়ে দিতে তো পারেন মন্ত্রী-আমলারা? কেন ছাড়ছেন না? না, জুতসই জবাব মেলেনি কোনও।

পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদীর লালবাতি বাতিলের একতরফা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদও রাজ্য জানাবে বলে ঠিক হয়েছে। রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই কেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক লালবাতি বাতিল করল, আপত্তি তা নিয়েই। রাজ্য মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত আসলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। যদিও কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে লালবাতি খুলেই ফেলা হবে বলে নবান্ন মনস্থ করেছে।

প্রশাসনের একাংশের মতে, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আসলে খরচই বাড়বে। কারণ, মন্ত্রী-আমলারা লালবাতি হারানোর পর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশের হুটারওয়ালা এসকর্ট ভ্যান নিতে চাইবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন