Amit Shah

BJP: শাহি সফরের সপ্তাহ পার, বঙ্গ বিজেপি সেই তিমিরেই

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি বঙ্গ বিজেপি নতুন করে লড়াই করার জায়গায় আছে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২২ ০৭:১৬
Share:

ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বঙ্গ সফর সেরে দিল্লি ফিরে গিয়েছেন দিন দশেক হল। তবে এখনও তাঁর দেখানো পথে সামান্যতম এগোতে পারল না রাজ্য বিজেপি। এমনকি শাহি পরিকল্পনা কী ভাবে বাস্তবায়িত করা যায়, তা নিয়ে এখনও কোনও বৈঠকই বসাতে পারল না বঙ্গ বিজেপি। বরং এখনও পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িই চলছে বহাল তবিয়তে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি বঙ্গ বিজেপি নতুন করে লড়াই করার জায়গায় আছে?

Advertisement

বঙ্গ বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর এক নেতা তো ঘনিষ্ঠ মহলে বলেই ফেললেন, ‘‘এদের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে না এরা দলটাকে রাখতে চাইছে।’’ যদিও রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের যুক্তি, "বিজেপি একটা গণতান্ত্রিক দল। সেই দল হঠাৎ একদিন মনে করল রাস্তা অবরোধ করে দিল আর রাস্তার লড়াই শুরু হয়ে গেল এমন হয় না।"

কী বলেছিলেন অমিত শা? ৬ মে নিউটাউনের হোটেলে বিজেপির সাংগঠনিক সভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বঙ্গ বিজেপি নেতাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, গণতান্ত্রিক উপায়েই তৃণমূলকে সরিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। কী ভাবে তা সম্ভব সেই পথ বাতলাতে গিয়ে তিনি বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাহরণও টেনে আনেন। নেতাদের বলেন, ‘‘বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা দিদিও অনেকে মার খেয়েছেন। কিন্তু রাস্তার আন্দোলন ছাড়েননি। আমাদের ওপরেও মিথ্যা মামলা হচ্ছে, আমাদের কর্মীরা মার খাচ্ছে। লড়াই ছাড়ার কোনও উপায় নেই। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেই আমাদের ক্ষমতায় আসতে হবে।’’

Advertisement

কিন্তু বিজেপির অঘোষিত নম্বর দুই যে নির্দেশ দিয়ে গেলেন, তা কার্যকর করতে দল কী ভূমিকা নিচ্ছে? সে উত্তর নেই নেতাদের কাছে। দলের সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘উনি আসার আগেই আমরা রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। একটানা রাস্তায় আছি। মাঝে সাংগঠনিক সভা, ইদ প্রভৃতির জন্য কিছুদিন কর্মসূচি করা যায়নি। এখন জেলায় জেলায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মিছিল হচ্ছে। নেতারা জেলায় জেলায় যাচ্ছেন। মাঝে একটা সময় এসেছিল যখন আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়েছিল। এখন আবার আন্দোলন হচ্ছে। একই সঙ্গে সাংগঠনিক কাজও চলছে।’’ তবে দিলীপ যতই দাবি করুন না কেন বাস্তব চিত্রটা সম্পূর্ণ আলাদা। নতুন কর্মসূচির পরিকল্পনা করা তো দূরের কথা। ১১ মের মধ্যে জেলায় জেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনও তা শেষ করা সম্ভব হয়নি। নিচু তলার কর্মীর অভাবেই যে তা সম্ভব হচ্ছে না ব-কলমে মেনে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারাও। এক বিজেপি নেতা বলেন, “যদি কেউ শেষ দিন মনোনয়ন জমা দিয়ে নির্বাচনে হেরে তারপরেই সাধারণ সম্পাদক হয়ে দল চালান, তাহলে এমনটাই তো হবে। এখন প্রয়োজন বুথে বুথে বসে যাওয়া দলের কর্মীদের মাঠে নামানো।” তাঁর প্রশ্ন, “এ কাজ করার মতো ‘উপযুক্ত নেতা’ কই? এঁরা তো চেনেনই না অধিকাংশকে।”

এই পরিস্থিতে দলের শীর্ষ নেতারা প্রায় সকলেই দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা হুগলির সংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বললেন, "আমি দিল্লিতে আছি।" কিন্তু শাহি নিদানের পর দল কি রাস্তার আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য কোনও বিশেষ পরিকল্পনা করছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেন, ‘‘এই সব প্রশ্ন সভাপতিকে করুন।’’ শমীকের বক্তব্য, "আমি সংগঠনের কোনও বিষয়ে কিছু জানি না। আমি এই নিয়ে কিছু বলতে পারব না।" সুকান্ত মজুমদারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন