আদর: বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: শুভ্র মিত্র
প্রায়ই তিনি বলে থাকেন, জন্ম থেকে মৃত্যু প্রতি ক্ষেত্রেই কোনও না কোনও সুবিধা তিনি দিচ্ছেন। জন্মালে দামি গাছই হোক বা মৃত্যুর পরে সৎকারের খরচ! পঞ্চায়েত ভোটের আগে এ বার রাজ্য সরকারের এই সুবিধা-বিলির ‘প্রতিদান’ চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তার নির্যাস— এত যখন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, ভোটের সময় মানুষ যেন দু’হাত ভরে তা ফিরিয়ে দেয়। প্রশাসনিক সভা থেকে মমতার আবেদন, ‘‘কন্যাশ্রী বলুন, শিক্ষাশ্রী বলুন, দু’টাকা কিলো চাল বা বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য, সবুজশ্রী, আশা, আইসিডিএস বা পঞ্চায়েত ওয়ার্কার, মিউনিসিপ্যালিটি ওয়ার্কার— সবার জন্যই বলছি। এই পঞ্চায়তেগুলোর মাধ্যমেই আমরা কিন্তু কাজগুলো করব। এই পঞ্চায়েতগুলো আমাদের নিশ্চয়ই জেতাবেন।’’
এর আগেও পরিষেবা বিলির সভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, তৃণমূল পঞ্চায়েতে থাকলেই ঢালাও সুবিধা দেওয়া চালু থাকবে। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কখনও কখনও জনপ্রতিনিধিদের বকুনি দিতেও দেখা গিয়েছে মমতাকে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে অবশ্য আপাতত সে সব মাথায় রাখছেন না তিনি। মমতার পরামর্শ, ‘‘স্কিমগুলো করে নিন আর নিজেরা ভাল থাকুন।’’
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের ‘প্রতিদান’ মমতা প্রকাশ্য সভায় খোলাখুলিই চাইছেন দেখে বিরোধীরা সমালোচনায় মুখর। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দল তৃণমূল মানুষকে ‘পাইয়ে’ দেওয়ার রাজনীতি করে তার হিসেব ভোটবাক্সে মিলিয়ে নিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী যেমন বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো মাছের তেলে মাছ ভাজছেন। মানুষের করের টাকা আর কেন্দ্রের টাকায় মানুষকে সুবিধা দিচ্ছেন উনি। আর ভোটভিখারির মতো ঘুরে ঘুরে ভোটভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন।’’ যা দেখে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যা বিলি করছেন, তার সবই তো নাম ভাঁড়িয়ে! প্রধানমন্ত্রী দিচ্ছেন আর উনি নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন।’’