রোজ ভ্যালির তদন্তে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কর্তৃপক্ষকে আবার ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। যার জেরে বৃহস্পতিবার কলেজের এক প্রতিনিধি সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দফতরে হাজির হন।
২০১০ সালে ছেলেকে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে ভর্তি করার সময়ে রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডু যে ৭১ লক্ষ টাকা ‘ডোনেশন’ দিয়েছিলেন, তার পুরোটা কলেজ কর্তৃপক্ষ পাননি বলেই তদন্তকারীদের সন্দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পরে জানা গিয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রায় ৫৯ লক্ষ টাকা হাতে পেয়েছিলেন। আরও প্রায় ১২ লক্ষ টাকা কোথায় গেল, এ বারে তার সন্ধান শুরু করেছে সিবিআই। এর আগেও দু’বার ওই কলেজের কর্তৃপক্ষকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। সেই সময়ে ‘ডোনেশন’ বাবদ যে টাকা গৌতমের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছিল, তার বিস্তারিত হিসেবও কলেজ কর্তৃপক্ষ সিবিআইয়ের কাছে জমা দিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর। সিবিআই সূত্রের খবর, এ দিন সেই হিসেব নিয়েই আরও তথ্য জানার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল কলেজ প্রতিনিধিকে।
রোজ ভ্যালি তদন্তে নেমে আরও এক নয়া তথ্য পেয়েছে সিবিআই। এই কলেজের প্রাক্তনীদের নিয়ে গঠিত সংগঠনকেও এক সময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছিলেন গৌতম। সিবিআই সূত্রের খবর, এই কলেজের প্রাক্তনীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে রয়েছেন। প্রাক্তনীদের এই সংগঠন তাই প্রতি বছরই বিদেশে অনুষ্ঠান করে। ২০১৩-র মে মাসে লন্ডনে এমনই এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রাক্তনীদের দেখানোর জন্য একটি বাংলা সিনেমা বাছা হয়েছিল। জানা যায়, সেই বাংলা সিনেমার প্রযোজক ছিলেন গৌতম কুণ্ডু। প্রাক্তনীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সে সময় রোজ ভ্যালি কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। লন্ডনে প্রাক্তনীদের ওই অনুষ্ঠানে নিজের প্রযোজিত বাংলা সিনেমাটি দেখাতে রাজি হয়েছিলেন গৌতম। তখনই ওই অনুষ্ঠানের জন্য তাঁর কাছে ‘ডোনেশন’ চাওয়া হয়। সিবিআই জানতে পেরেছে, সেই সময়ে জেভিয়ার্সের প্রাক্তনীদের মোটা অঙ্কের ডোনেশন দিয়েছিলেন গৌতম।
বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তে নেমে এ ভাবে ঐতিহ্যবাহী এই কলেজের নাম বার বার জড়িয়ে যাওয়ায় বিব্রত প্রাক্তনীদের একাংশ। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা এ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।