জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মত সিংহ।ফাইল চিত্র
টানা চল্লিশ দিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পরে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হল জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মত সিংহকে। শনিবার শিলিগুড়ির এসিজেএম সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় ওই আদেশ দেন। সরকারি জমি দখলের অভিযোগে ৫ আগস্ট গ্রেফতার হয়েছিল ওই তৃণমূল নেতাকে। পরে আরও তিনটি মামলায় তাঁর নাম জড়ায়। হিম্মতকে ফের ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতে তোলার কথা।
যে চারটি মামলায় হিম্মতের নাম জড়িয়েছিল তার মধ্যে একটি ছিল এক আদিবাসীর জমি দখলের মামলা। এ দিনই সেই মামলার অভিযোগকারী আদালতের কাছে হলফনামা দিয়ে জানান, তাঁর মামলা করা উচিত হয়নি। হিম্মতের আইনজীবী আরও দাবি করেন, ‘‘আদিবাসীর জমি দখলের মামলায় অভিযোগকারী বন্ধন মাহালি এদিন আদালতকে জানিয়েছেন, হিম্মত সিংয়ের কোনও দোষ নেই। কারণ, তাদের পূর্বপুরুষের সঙ্গে হিম্মত সিংহের পরিবারের ওই জমি নিয়ে আগেই সমঝোতা হয়েছে।’’
প্রধাননগরের মিলন মোড়ে প্রায় তিন একর জমি হাকিমপাড়ার এক ব্যক্তিকে বিক্রির অভিযোগ হিম্মতের দু’জন শাগরেদের নাম জড়িয়েছিল। সেই মামলাতেই প্রায় তিন দিনের পুলিশি হেফাজত শেষে এ দিন হিম্মতকে পেশ করা হয় আদালতে। কিন্তু ওই মামলায় পুলিশ সেরকম কোনও তথ্য যোগাড় করতে পারেনি। এ দিন সরকারি আইনজীবী সৌমিত্র সিংহ সরকার আদালতে জানান, পুলিশের সঙ্গে হিম্মত সহযোগিতা করছেন না। এ দিন আদালতকক্ষে কাউকেই থাকতে দেননি বিচারক। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও আদালত কক্ষে থাকতে পারেননি। হিম্মত সিংয়ের আইনজীবী সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘‘বিভিন্নভাবে মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে আমার মক্কেলকে আটকে রাখার চেষ্টা করছে পুলিশ।’’ এ দিনই সরকারি জমি দখলের মামলায় চম্পাসারির ব্যবসায়ী পরিমল সাহাকে আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁর জামিনের আবেদনও খারিজ হয়।
এ দিকে পুলিশি হেফাজতে হিম্মতকে বিরিয়ানি ও মদ দেওয়ার অভিযোগের জেরে সাসপেন্ড করা হয়েছে প্রধাননগর থানার পুলিশ আধিকারিক মিহির মজুমদারকে। যদিও, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছি বিভাগীয় তদন্ত। হিম্মতের বিরুদ্ধে একটি জমি জালিয়াতির অভিযোগের তদন্তভারও ছিল তাঁর উপর। ঘটনার কথা জানতে পেরে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনা ওই অফিসারকে শুক্রবার রাতে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন বলে দাবি করা হয়েছে পুলিশ সূত্রে।
শিলিগুড়ির কমিশনার ভরতলাল মিনা বলেন, ‘‘ওই অফিসারের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে বটে। তবে এগুলি আভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই এসব নিয়ে এর বেশি কিছু বলব না।’’ মিহিরবাবু নিজে কী বলছেন? তার কথায়, ‘‘এ নিয়ে আমি আর কী বলব? অভিযুক্তকে সুস্থ রাখতে গিয়ে আমাকেই বলি হতে হল। আমি বিরিয়ানি, মদ কোনওটাই খাওয়াইনি।’’