(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কলকাতায় রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করল বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম। রাতভর বৃষ্টিতে বেহাল কলকাতা-সহ সংলগ্ন এলাকা। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে জলমগ্ন শহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে একাধিক স্কুলে। বিভিন্ন কলেজও বন্ধ রাখা হয়েছে। তার মধ্যেই দলীয় কর্মসূচি বাতিলের কথা ঘোষণা করল রাজনৈতিক দলগুলি। শাসক তৃণমূলের তেমন কোনও দলীয় কর্মসূচি ছিল না। ফলে পৃথক ভাবে তারা বাতিলের কথা ঘোষণাও করেনি। তবে বিপর্যস্ত কলকাতাকে স্বাভাবিক করতে ময়দানে নামতে হয়েছে প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত থাকা নেতাদের। নবান্ন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার কলকাতার কোনও পুজোর উদ্বোধন করবেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী কাল, বুধবার থেকে আবার উদ্বোধন শুরু হবে কলকাতায়। তবে যে সব জেলার আবহাওয়া ভাল রয়েছে, বাড়ি থেকে ভার্চুয়ালি সেই সব পুজোর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী কাল, বুধবার কালীঘাট মন্দিরের আদলে তৈরি কালীঘাট ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মঙ্গলবারের প্রবল বর্ষণের জেরে তাঁর সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ভারতীয় জাদুঘরে বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইল্স’ দেখার কথা ছিল তাঁর। এ ছাড়া বেলেঘাটায় নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের শুরু করা পুজো এবং কসবায় একটি পুজোর উদ্বোধন করার কথা ছিল বিরোধী দলনেতার। খারাপ আবহাওয়ার কারণেই সব ক’টি কর্মসূচিই বাতিল করে দিয়েছেন শুভেন্দু।
কংগ্রেসের জাতীয় স্তরের তিন নেতা সুপ্রিয়া শ্রীনতে, গোলাম আহমেদ মীর এবং মহিমা সিংহ সাংবাদিক বৈঠকের জন্য কলকাতায় উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু জলমগ্ন পরিস্থিতি এবং মঙ্গলবার দিনভর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কারণে সেই বৈঠক বাতিল করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের আহ্বায়ক মিতা চক্রবর্তী। সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠক ছিল। তা ইতিমধ্যেই বাতিল করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে দলের তরফে।
মহালয়ার দিন থেকেই শহর কলকাতায় ঠাকুর দেখার ভিড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রতিপদ পেরিয়ে দ্বিতীয়াতেই তাতে বাদ সেধেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যে বৃষ্টি সাম্প্রতিক সময়ে নজিরবিহীন। মঙ্গলবার সারা দিন ধরেই বিক্ষিপ্ত ও মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তার মধ্যেই দুপুরে গঙ্গায় জোয়ারের সময় জলস্তর ফের বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে জমা জল নামতে ১০-১২ ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে পুরসভার তরফে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কর্মসূচি বাতিল করল রাজনৈতিক দলগুলিও।