একান্তে: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। মঙ্গলবার কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
যুব-তৃণমূল সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। দলের যুব সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতাদের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে মাঝে মধ্যেই। মঙ্গলবার কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি সভায় অবশ্য হাজির হলেন সবাই। একই সঙ্গে দেখা গেল যুব ও তৃণমূল-সহ সব পক্ষের নেতাদের।
মঞ্চের প্রথম সারিতেই ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ থেকে শুরু করে বিধায়ক উদয়ন গুহ। ছিলেন যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। এমনকী মঞ্চে দেখা গেল যুব তৃণমূল নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিককেও। সবার হাত দিয়েই সরকারি সুবিধাপ্রাপ্তদের নানা জিনিসপত্র তুলে দেওয়ার সুযোগও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে কি দুই পক্ষের বিরোধ মিটল, জল্পনা চলছে তৃণমূলের অন্দরে।
রবীন্দ্রনাথবাবু থেকে পার্থপ্রতিম রায় কেউই অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের কোচবিহার জেলার এক নেতা বলেন, “কোচবিহারে দীর্ঘদিন ধরে দু’পক্ষের লড়াইয়ের খবর আছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তাতে যে দলের পরিস্থিতি খুব একটা ভাল জায়গায় যাচ্ছেন না তা তিনি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছেন। এখন পরিস্থিতি আলাদা হবেই বলে আশা করছি।” দল সূত্রের খবর, প্রশাসনিক বৈঠকের ঠিক আগেই সাংসদ-বিধায়কদের ডেকে সতর্ক করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনটা চলতে থাকলে ফল ভালো হবে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে কোচবিহার তথা দিনহাটায় যুব ও তৃণমূলের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত ওই লড়াইয়ে তিন জন খুন হয়েছে কোচবিহারে। এই অবস্থায় লোকসভা নির্বাচনের কথা ভেবে পরিস্থিতি পাল্টাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। সোমবার প্রশাসনিক সভায় দিনহাটা থানার আইসিকে গণ্ডগোলে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন সভার শুরুতেই মঞ্চে দুই পক্ষের নেতাদের দেখা যায়। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, বিধায়ক মিহি গোস্বামী, হিতেন বর্মন, অর্ঘ্য রায় প্রধান-সহ সব বিধায়কদের দেখা যায়। ছিলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া চ্যাংরাবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পরেশ অধিকারী, এমনকী জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল জলিল আহমেদ। রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ এক পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আজিজুল হক, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য খোকন মিয়াঁরাও ছিলেন। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও ছিলেন।