এক জন দশম শ্রেণির পড়ুয়া, অন্য জন কৃষক। পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই দু’জনকে পিটিয়ে মেরেছে বিএসএফ। তবে পরিবারের লোকজন বুধবার রাত পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। মালদহের ৩৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সিও ভগবান সিংহ পিটিয়ে মারার অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘মোমিনটোলা এলাকায় পাচারের সময় বহু গরু আটক করা হয়েছে। পাচারকারীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন আমাদেরই জওয়ান। ওই দু’জন কী ভাবে মারা গিয়েছেন, তা আমরাও খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
দশম শ্রেণির পড়ুয়া শরিফ শেখের (১৭) বাড়ি মুর্শিদাবাদের মোমিনটোলা গ্রামে। চাঁদ শেখ (৩৭) পড়শি গ্রাম হাজিপুরের বাসিন্দা। এই জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সীমান্ত ঘেঁষা মোমিনটোলা। এ দিন বিকেলে কয়েকশো গ্রামবাসী ঘেরাও করেন স্থানীয় বিএসএফ ক্যাম্প।
শরিফের মা আদরি বিবির দাবি, ছেলের মাধ্যমিক টেস্ট চলছে। সে রাত জেগে পড়ছিল। বাড়িতে শৌচাগার না থাকায় সে বাইরে গিয়েছিল। তখনই কয়েক জন বিএসএফ জওয়ান তাকে পাকড়াও করে টেনে নিয়ে যায় পদ্মার চরে। বেধড়ক মারধর করে। শরিফের চিৎকারে তিনিও ছুটে যান। ততক্ষণে জওয়ানেরা পালিয়েছে। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে শরিফই তাঁদের সব জানায়। বুধবার ভোরে হাসপাতালেই মারা যায় শরিফ।
চাঁদের দাদু বরজাহান শেখের দাবি, মঙ্গলবার মোমিনটোলা গ্রামে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন চাঁদ। রাতে বাড়ির বাইরে বেরোতেই বিএসএফ জওয়ানেরা তাঁকেও তুলে নিয়ে যায় নদীর দিকে। সেখানেই মারধর করে ফেলে রাখে। তাঁকেও প্রথমে জঙ্গিপুর হাসপাতাল ও পরে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বুধবার বিকেলে তিনিও মারা যান। রঘুনাথগঞ্জের আইসি সৈকত রায় বলেন, “মৃত ওই দু’জনের বাড়ি থেকে এখনও কেউই কোনও অভিযোগ করেননি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের কাছেও মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়।’’