বলরামপুর থানায় মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে জোড়া অভিযোগ দায়ের হয়েছে।—নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে জোড়া অভিযোগ দায়ের হল পুলিশে। অভিযোগকারী কোনও রাজনীতিক নন। বলরামপুর থানায় মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা করে অভিযোগ দায়ের করলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার। বলরামপুরে সভা করে বিজেপি নেতা ‘অপমানজনক মন্তব্য’ করেছিলেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে, তাই এই পদক্ষেপ— জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পুরুলিয়ার বলরামপুরে গত ৫ নভেম্বর জনসভা করেন মুকুল রায়। সেই জনসভা থেকেই জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে তিনি আক্রমণ করেন। রাজ্যের শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন ওই দুই আধিকারিক— এমনই বক্তব্য শোনা গিয়েছিল মুকুল রায়ের কাছ থেকে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়ার বিরুদ্ধে কয়লা পাচার সংক্রান্ত দুর্নীতিতে জড়িত থাকার এবং তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগ তোলেন মুকুল, খবর স্থানীয় সূত্রের। আর জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়ের প্রতি মুকুল রায়ের সুর ছিল হুমকির, অভিযোগ অন্তত তেমনই। অলকেশপ্রসাদ রায়ের পদোন্নতি আর হতে দেবেন না তিনি— মুকুল রায় এমনই মন্তব্য জেলাশাসকের উদ্দেশে করেন বলে খবর।
বিজেপি নেতার এই সব মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই বলরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় এবং পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া। অলকেশবাবু ফোনে আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘মুকুল রায় একটি জনসভায় দাঁড়িয়ে আমার নামে এবং পুলিশ সুপারের নামে অপমানজনক, অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তার প্রেক্ষিতেই ওঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ সুপারও একই কারণে আলাদা করে অভিযোগ দায়ের করেছেন।’’
আরও পড়ুন: সঙ্গে নাচতে নারাজ, সোনারপুরের পুজো মণ্ডপে মারধর করে মহিলাদের পোশাক ছিঁড়ল দুষ্কৃতীরা!
আরও পড়ুন: পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, ওসিকে ৬ ঘণ্টা আটকে রেখে জাতীয় সড়ক অবরোধ বীরভূমে
জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশের দুই শীর্ষকর্তা যে ভাবে অভিযোগ দায়ের করলেন তাঁর বিরুদ্ধে, মুকুল রায় নিজে তা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও দেননি। তবে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র সায়ন্তন বসু বললেন, ‘‘এগুলো সব চাপ বাড়ানোর কৌশল। একের পর এক মামলা দিয়ে বিজেপির নেতা-কর্মীদের চাপে রাখতে চাইছে তৃণমূল চালিত সরকার। এ রকম মামলা আমার নামেও রয়েছে। দিলীপ ঘোষের নামে আরও বেশি রয়েছে।।’’ সায়ন্তন আরও বলেন, ‘‘যত মামলা দিতে চায় দিক। যার নামে খুশি মামলা করুক। ও সব করে আমাদের থামানো যাবে না।’’
রাজনৈতিক ভাবে পুরুলিয়া এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাংলায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রামেই তৃণমূলকে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিতে পেরেছে বিজেপি। সেই পুরুলিয়ার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারই আলাদা আলাদা করে অভিযোগ দায়ের করছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতার বিরুদ্ধে— এই ঘটনার রাজনৈতিক তাৎপর্য যথেষ্ট বলে মত বিশ্লেষকদের।