Bengali Theater

নাট্যজগতে ফের মি-টু, অভিনয় শেখানোর নামে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ পরিচালকের বিরুদ্ধে

ফেসবুকের ওই পোস্টে অভিযোগকারিণী লিখেছেন, তিনি শাঁওলি মিত্র, অর্পিতা ঘোষের ছাত্রী। ২০১১-’১২ সাল নাগাদ তিনি অভিনয় শিখতে ওই নাট্যব্যক্তিত্বের কাছে যান। তিনি অভিযোগকারিণীকে সোদপুরের কাছেতাঁর সুখচরের ফ্ল্যাটে ডাকেন। সেখানে যাওয়ার পর দরজা বন্ধ করে অভিনয়ের কৌশল শেখানোর নামে তিনি অভিযোগকারিণীর যৌন নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:১০
Share:

মি টু এর অভিযোগ আরও এক নাট্যকারের বিরুদ্ধে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গত কয়েকদিনে ‘মি টু’ নিয়ে উত্তাল বাংলার সংস্কৃতিজগৎ। একের পর এক ব্যক্তিত্বের নাম উঠে আসছে যৌননিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে। সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জন ঘোষালের পরে এবার যৌন নির্যাতনের অভিযোগউঠল এক নাট্যব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারিণী মঙ্গলবার রাতে তাঁর ফেসবুক পোস্টে প্রথমে সেই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেননি। তবে পরে তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্তের নাম মলয় মিত্র। তিনি সোদপুরের কাছে একটি নাটকের দলের কর্ণধার।

Advertisement

ফেসবুকের ওই পোস্টে অভিযোগকারিণী লিখেছেন, তিনি শাঁওলি মিত্র, অর্পিতা ঘোষের ছাত্রী। ২০১১-’১২ সাল নাগাদ তিনি অভিনয় শিখতে ওই নাট্যব্যক্তিত্বের কাছে যান। তিনি অভিযোগকারিণীকে সোদপুরের কাছেতাঁর সুখচরের ফ্ল্যাটে ডাকেন। সেখানে যাওয়ার পর দরজা বন্ধ করে অভিনয়ের কৌশল শেখানোর নামে তিনি অভিযোগকারিণীর যৌন নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। ফেসবুকে দাবি করা হয়েছে, বন্ধ দরজার বাইরে এক ব্যক্তিকে পাহারার কাজে রেখেছিলেন ওই নাট্যব্যক্তিত্ব। ওই পাহারাদার একজন পেশাদার খুনি বলে অভিযোগকারিণীকে ভয় দেখিয়েছিলেন পরিচালক, এমনটাই দাবি করেছেন এই তরুণী।

কী হয়েছিল সে দিন? ফেসবুকে অভিযোগকারিণী লিখছেন, ‘স্যর আমায় বললেন ইম্প্রোভাইজ করাবেন। অর্থাৎ বিভিন্ন মুহূর্ত বা চরিত্র উল্লেখ করে দেবেন। আর সেই মতো নিজের ক্যারেক্টার চেঞ্জ করে অভিনয় করতে হবে।...এর পর উনি আমায় প্রথম টপিক দিলেন সিডাকশন।অনেস্টলি আমি মানে জানতাম না শব্দটার। মানে জিজ্ঞেস করতে বললেন,আমায় সিডিউস কর। যাতে তোকে দেখে আমার উত্তেজনা জাগে।’এর পরই অভিযোগকারিণী লিখেছেন, কী ভাবে তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন ওই নাট্যব্যক্তিত্ব।

Advertisement

আরও পড়ুন:সকন মন্দিরে লোন উল্ফ কায়দায় জঙ্গি হানার ছক! ভারতীয় গোয়েন্দারা সতর্ক করল ঢাকাকেও
আরও পড়ুুন:পুনরুজ্জীবনের দাওয়াই সেই সংযুক্তিকরণ, মিশে যাচ্ছে বিএসএনএল-এমটিএনএল

অভিযোগকারিণীর দাবি, কোনও রকমে সেদিন পালিয়ে বাঁচেন তিনি। বুধবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি এতদিন এই ঘটনা খুব বেশি লোককে বলিনি। কাছের কয়েক জন মানুষকে বলেছিলাম। ওরাই আমায় সাহস দেয়। বলে, এটাই সময় মুখ খোলার। আমিও ভাবি,মলয় মিত্র ছোটদের নাটক শেখান। সব অস্বস্তি এড়িয়ে মুখ না খুললে আরও কত শিশুর ক্ষতি হবে। সেই ক্ষতির দায় তো আমারও।’’

অভিযোগকারিণীর ওই পোস্টের কিছু অংশ।

সামাজিক মাধ্যমে অভিযোগ জানিয়েই কিন্তু থামতে চাইছেন না অভিযোগকারিণী। এত বছর পরে মুখ খোলার ঘটনা কেমন ভাবে পরিবার নেবে, প্রাথমিক ভাবে তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন তিনি। কিন্তু, কঠিন সময়ে পরিবারতাঁর পাশেদাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই তরুণী। তাই আইনি পথেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রস্তুতি চলছে মহিলা কমিশনে যাওয়ারও। যদিও বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেননি।

ফেসবুকে এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটিজেনরা। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ওই পোস্ট। অনেকেই ওই নাট্যকারের নাম করে সরব হন তাঁর শাস্তি চেয়ে। যদিও মলয় মিত্র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠতে পারে সেটাই ভাবতে পারছি না। বহু অপরিচিত মানুষ ফোন করে হুমকি দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা খুশি লেখা হচ্ছে। আইনি পথেই আমি এর মোকাবিলা করছি। আইনজীবীর সঙ্গে কথাও বলেছি। বহু মানুষ আমার পাশে আছেন।’’

নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ফেসবুকে পাল্টা পোস্ট করেছেন মলয়। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ফেসবুকে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার বিরুদ্ধে যে জঘন্য অভিযোগ প্রচারিত হচ্ছে তা মিথ্যে। আমি আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি।’তাঁর দলের তরফেও একই ধরনের বিবৃতি দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন