Kalyani AIIMS

BJP: বিধায়কের নিজের আত্মীয়দের চাকরি, অমিত শাহকে ই-মেলে অভিযোগ বিজেপি কর্মীর

গত ৬ মে-র তারিখ দেওয়া ওই ই-মেলে বিজেপি কর্মী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে, সাত দিন আগে বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূকে এমসে নিয়োগ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২২ ০৫:৩৬
Share:

ফাইল ছবি

এসএসসি-তে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠায় তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা যখন সিবিআই তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছেন, ঠিক তখনই কল্যাণী এমসে নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির নেতা-বিধায়কদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন দলের কর্মীরাই।

Advertisement

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দলের দুই বিধায়কের নিকটাত্মীয়ের নিয়োগ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নামে ই-মেল পাঠিয়েছেন কল্যাণীর এক বিজেপি কর্মী। তাঁদের এক জন নদিয়ারই হরিণঘাটার বাসিন্দা। বাম আমলে সিপিএমের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি, লোকসভা নির্বাচনের আগে দল বদলে বর্তমানে চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ। অপর জন বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা।

কয়েক দিন আগেই রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে এমসে চাকরি করে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তানিয়া ভট্টাচার্য নামে দলের এক যুবনেত্রী। তার পরেই তাঁর পদ কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেন জগন্নাথ। কার্যত তখনই বোঝা গিয়েছিল যে পরিস্থিতি ক্রমশ নেতৃত্বের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।

Advertisement

গত ৬ মে-র তারিখ দেওয়া ওই ই-মেলে বিজেপি কর্মী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে, সাত দিন আগে বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূকে এমসে নিয়োগ করা হয়েছে। নীলাদ্রিশেখরের মেয়েও এমসে নিয়োগ পেয়েছেন। এই নেতাদের দুর্নীতির কারণে টিএমসি-র সঙ্গে লড়ে যাওয়া সাধারণ বিজেপি কর্মীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগকারী বিজেপির দীর্ঘদিনের কর্মী। দলের নানা জেলা পদেও ছিলেন। বৃহস্পতিবার পার্থ বলেন, “যা জানানোর তা দলের অভ্যন্তরে উচ্চ নেতৃত্বকে এবং অমিত শাহজিকে জানিয়েছি।”

এ দিন হরিণঘাটায় বঙ্কিম ঘোষের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে পরে ফোনে তিনি বলেন, “গত ডিসেম্বরে একটি সংস্থার মাধ্যমে এমসে চুক্তিভিক্তিক কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল। আমার পুত্রবধূ পরীক্ষা দিয়ে এক বছরের চুক্তিতে কাজ করছেন। তিনি কোন বিভাগে কাজ করেন, তা-ও আমি বলতে পারব না। এতে আমার কোনও হাত নেই।”

বিজেপি সূত্রের দাবি, বর্তমানে সাংসদ জগন্নাথ সরকারের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত পার্থ। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জগন্নাথ অবশ্য দাবি করছেন, “ও যে মেল করেছে সেটাই আমি জানতাম না। আমি তো জানি, যারা চাকরি পাচ্ছে তারা পরীক্ষা দিয়ে পাচ্ছে। অন্যায় হয়ে থাকলে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” জগন্নাথের বিরোধী বলে পরিচিত, দলের রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাসের নামও এমসে নিয়োগের তরজায় বারবার সামনে এসেছে। তিনি অবশ্য পাল্টা বলেন, “এমসে কাজ দেওয়ার জন্য কাউকেই আমি সুপারিশ করিনি। কে বা কারা দিচ্ছে তার তদন্ত হোক।” নদিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায়ের দাবি, “এরা দুর্নীতির চরম সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। বিজেপির লোকজনই তা বলছে। অথচ এরাই আবার অন্যের নামে দোষ দিয়ে সিবিআই লাগাচ্ছে!”

এ দিন দুপুরে বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে বা তাঁর মেয়েকে পাওয়া যায়নি। পরে ফোনে তিনি দাবি করেন, ‘‘যদি বিধায়ক হিসেবে প্রভাব খাটানোর কথা ভাবতাম, তবে ঠিকা সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক কাজে মেয়ের নিয়োগ চাইতাম না। ছেলেমেয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নেয়। আমি মাথা গলাই না।’’ বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের দাবি, ‘‘ঠিকাদার সংস্থায় নিয়োগের সঙ্গে মন্ত্রীর সম্পর্ক থাকে না। যত দূর শুনেছি, বিজ্ঞাপন দেখে আবেদনের ভিত্তিতেই বিধায়কের মেয়ে চাকরি পেয়েছেন।’’

এমসের কার্যনির্বাহী অধিকর্তা রামজি সিংহকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। এমসের জনসংযোগ আধিকারিক তথা চিকিৎসক সুকান্ত সরকার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন