কেন্দ্রের সব টাকা সিন্ডিকেটেই শেষ!

এ রাজ্যে দলের সাংগঠনিক অবস্থা যাচাই করতে রবিবার রাত থেকে কলকাতায় রয়েছেন অমিত। এ দিন আইসিসিআর-এ তিনি তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত পরিবারের ৯৩ জনের সঙ্গে দেখা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:২৫
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজ্য সরকারকে দেওয়া কেন্দ্রের টাকা সিন্ডিকেটের পিছনে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

Advertisement

কলকাতার আইসিসিআর-এ মঙ্গলবার বিদ্বজ্জনদের সভায় তিনি বলেন, ‘‘মমতাজিকে বলি, এত পয়সা কোথায় গেল? বিদ্যুৎ, সাক্ষরতা, শিল্প, পানীয় জল কিছুই হল না কেন? সব পয়সা সিন্ডিকেটে শেষ হয়ে গেল?’’ গত তিন বছরে বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রের দেওয়া টাকার খতিয়ান দিয়ে বিদ্বজ্জনদের উদ্দেশে অমিতের আরও বক্তব্য, ‘‘আপনারা লাল থেকে নীল সরকার এনেছিলেন। ভেবেছিলেন, গরিবি, বেকারত্ব ঘুচবে। শিক্ষা, শিল্পে উন্নতি হবে। বাংলা তার হৃত গৌরব ফিরে পাবে। কিন্তু সাত বছর পর কী হল? সব ক’টার উত্তর ‘না’।’’ সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগেও রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন অমিত। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, ‘‘এত হিংসা দুনিয়ায়
কোথাও দেখিনি।’’

এ রাজ্যে দলের সাংগঠনিক অবস্থা যাচাই করতে রবিবার রাত থেকে কলকাতায় রয়েছেন অমিত। এ দিন আইসিসিআর-এ তিনি তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত পরিবারের ৯৩ জনের সঙ্গে দেখা করেন। ধূলাগড়ের মৈত্রী মণ্ডল অমিতকে জানান, বিজেপি তাঁদের কোনও সাহায্যও করেনি। রাজ্য সরকার ৩৫ হাজার টাকা সাহায্য দিয়েছিল। পরে বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘ওঁদের দেখার পর মনে হল, আর কোথাও বোধহয় এত হিংসা হয় না!’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল, তিনি যে দিন এই কথা বলেছেন, সেই দিনই সিট তাঁকে তলব করেছে পনেরো বছর আগের গুজরাত গণহত্যা নিয়ে প্রশ্ন করার জন্য ।

Advertisement

অমিতের সংযোজন, ‘‘হাত, পা ভেঙে, বাড়ি-দোকান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, শুধু রাজনীতি আলাদা বলে? এই কি রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দের বাংলা?’’ তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, কমিউনিস্টরাও একই কায়দায় বিরোধীদের উপর আক্রমণ করত। তার বিরুদ্ধেই বিপুল জনাদেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার গড়েছিলেন। এখন যদি সেই ভাবেই বিজেপির উপর হামলা করে তাদের গতি আটকানো যাবে না। অত্যাচার যত বাড়বে, বিজেপি কর্মীরা ততই শক্ত হাতে তার মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবেন বলেও দাবি অমিতের।

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন পাল্টা বলেন, ‘‘কৃষিক্ষেত্রে পাঁচ বার আমরা কৃষিরত্ন পেয়েছি। কন্যাশ্রীতে বিশ্বজয় করেছি। ১০০ দিনের কাজে প্রথম সারিতে, রাস্তা উন্নয়নে, ক্ষুদ্র শিল্পে, শিক্ষায় প্রথম। তাঁদের বোধহয় প্রথম কথাটা ভাল লাগছে না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছেন।’’ আর রাজনৈতিক হিংসা প্রসঙ্গে অমিতকে পার্থবাবুর জবাব, ‘‘রাম রহিম কে? উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে এত হিংসা হল কেন? গুজরাতে দাঙ্গার নায়ক কারা? বিভিন্ন রাজ্যে সন্ত্রাস, উচ্ছৃঙ্খলতা কারা করছে? এ সব কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে!’’ ৪৯টি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্ধেক অনুদান কেন বন্ধ, সে প্রশ্নও তোলেন পার্থবাবু।

বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা অবশ্যই আছে। কিন্তু গুজরাত কাণ্ডে নাম জড়ানো অমিত শাহের মুখে তা নিয়ে কথা মানায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement