মোদীর সেনাপতি অমিতের শক্ত হাতেই বঙ্গের রাশ

তিন দিনের বঙ্গসফর সেরে দিল্লি ফিরেও রাশ এতটুকু আলগা করতে চাইছেন না নরেন্দ্র মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ। লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ২০-২২টি আসন জয় সুনিশ্চিত করতে দিল্লি থেকে সংগঠনের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা তো বটেই, বঙ্গসফরের সংখ্যাও বাড়াতে চলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

তিন দিনের বঙ্গসফর সেরে দিল্লি ফিরেও রাশ এতটুকু আলগা করতে চাইছেন না নরেন্দ্র মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ। লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ২০-২২টি আসন জয় সুনিশ্চিত করতে দিল্লি থেকে সংগঠনের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা তো বটেই, বঙ্গসফরের সংখ্যাও বাড়াতে চলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।

Advertisement

গত কাল অমিত শাহের সফরের শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘ওরা বাংলাকে টার্গেট করলে দিল্লিতে আমরা সরকার গড়ব।’’ এই বক্তব্যকে অমিত খুব বেশি আমল দিতে চাইছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘দিল্লিতে আসতে চাইলে নিশ্চয়ই আসুন।’’ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে সংগঠনের শক্তি বাড়ানোর যে ভাবনা তাঁর রয়েছে, সেটার উপরেই এখন বেশি জোর দিতে চান অমিত।

অমিত মনে করেন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেই স্পষ্ট হয়ে যাবে বাংলার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, গোটা দেশে ১২০টি এমন আসন বেছে নিয়ে এগোচ্ছেন অমিত, যেখানে গত লোকসভায় বিজেপি হেরেছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ২০-২২টির মতো আসন। গত লোকসভায় প্রবল মোদী হাওয়াতেও মাত্র ২টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু এখন কুড়িটির মতো আসনে জেতার পণ করেছেন অমিত।

Advertisement

আরও পড়ুন:অমিতের পাল্টায় দিল্লি দখলের ডাক দিদির

অমিত আজ নিজেই বলেন, ‘‘কোনও রাখঢাক না করেই বলতে চাই, এই আসনগুলিতে আমরা জিতব। তার জন্য সংগঠন বাড়ানো আমাদের কাজ। দিল্লি থেকে সংগঠনের উপরে কড়া নজর রাখা হবে। একেবারে বুথ স্তরে কে কোথায় যাচ্ছেন, কত দিন থাকছেন, কেউ ফাঁকি মারছেন কি না— সব কিছুর উপর নজরদারি হবে।’’ জুলাই মাসে তিনি ফের যাবেন পশ্চিমবঙ্গে। তার মাঝে ‘সংস্কৃতন সম্মেলনে’ যোগ দিতে এক দিনের সফরও করবেন। গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও এমন কিছু কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে, যাঁদের কাজ ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের গণনা পর্যন্ত পাঁচটি করে নির্বাচনী কেন্দ্রের মাটি কামড়ে পড়ে থাকা।

অমিতের সফরে মমতা যেভাবে নিজেকে বারবার ‘হিন্দু’ বলছেন, তাতে উৎসাহিত বিজেপি। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘বিজেপির উত্থানে মমতা যে ঘাবড়ে গিয়েছেন, এটি তারই প্রতিফলন।’’ বিজেপি নেতৃত্ব মনে করেন, দীর্ঘদিন বাম শাসনে থাকার সুবাদে ভোটারদের মননে বামপন্থার ছাপ রয়েছে। বিভিন্ন উপনির্বাচনে বিজেপির ভাল ফল হচ্ছে মানেই ভোটাররা আদর্শগত ভাবে গেরুয়াপন্থী হয়ে গিয়েছেন, এমনটা ভাবা হঠকারিতা। কিন্তু বাংলার মানুষ যে বিজেপির পক্ষে আসছেন, সেটি পরিসংখ্যানই বলছে। আর সেটিকেই পুঁজি করে এগোতে চাইছেন অমিত শাহ।

যদিও বিজেপির এই পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। দলের নেতা মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘যাঁরা এ রাজ্য থেকে তৃণমূলকে উৎখাতের স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের বলতে চাই যে এ রাজ্যে প্রতিটি ঘরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। তাঁকে এ মাটি থেকে সরানো মুশকিল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন