বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও দলের সভাপতি অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই
এক মাসনা গড়াতেই সুর বদলে গেল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের। পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে মুখ খুললেন তিনিও। দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের শুরুর দিনেই বললেন, ‘‘গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে হিংসার স্থান নেই।’’
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়ললিতাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন অমিত শাহ। কিন্তু কেরল জয়ের জন্য বাম নেতাদের অভিনন্দন জানাননি। কারণ ব্যাখ্যায় অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, কেরলে যেহেতু হিংসা হচ্ছে, বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে, তাই সচেতন ভাবেই তিনি অভিনন্দন জানানো থেকে বিরত থেকেছেন। কিন্তু সে দিন একই মঞ্চ থেকে মমতাকে অভিনন্দন জানিয়েই ক্ষান্ত হননি, তৃণমূল নেত্রীর জন্য এনডিএর দরজা খোলা রয়েছে— এমনটাও জানান বিজেপি সভাপতি। এক মাস পর তিনিই আজ কেরলের সঙ্গে এক সারিতে দাঁড় করালেন পশ্চিমবঙ্গকে।
এর পিছনে রয়েছে বিজেপির বাংলার নেতাদের রিপোর্ট। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহরা আজ দুপুরে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ভোটের পর পশ্চিমবঙ্গে যে ভাবে হিংসা হচ্ছে, তা নিয়ে সবিস্তার রিপোর্ট দেন। অনেক দিন ধরেই দিলীপ ঘোষ তৃণমূলের সন্ত্রাসের জবাব দিতে কখনও ‘ঘাড় মটকানো’, কখনও বা ‘বাড়িতে জল বন্ধ’ করে দেওয়ার মতো হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। মমতার শপথ গ্রহণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে অরুণ জেটলি ও বাবুল সুপ্রিয়রা দিল্লি থেকে গিয়ে উপস্থিত হলেও, রাজ্য নেতারা ওই অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন অনায়াসে।
বিজেপি সূত্রের মতে, অমিত শাহ এ দিন দলের রাজ্য নেতাদের জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ধর্ম মেনে যতই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা হোক, দলীয় ভাবে বিজেপি সংঘর্ষ চালিয়ে যাবে তৃণমূলের সঙ্গে। গত কাল রাজ্যসভার ফল আসার পর বিজেপির শক্তি আগের থেকে কিছুটা বাড়লেও এখনও কাঁটা দূর হয়নি এখনও। ফলে সরকার চালানোর দায়বদ্ধতা যা-ই থাকুক না কেন, তৃণমূলের সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াই চলবে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপির আসন এ বারে ১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩। জোটেদের নিয়ে ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এটিকে পুঁজি করে এখন থেকেই লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। সে কারণে আগামী লোকসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে সংগঠনকে আরও মজবুত করার দাওয়াই দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি।